চেক লেখার নিয়ম

আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থায় চেক একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আমরা অনেকেই চেক সঠিকভাবে লিখতে পারিনা, বিশেষ করে যারা একটু লেখাপড়া একটু কম জানি তাদের জন্য চেক লেখা যেন এক দুঃসাধ্য ব্যাপার। তাদের জন্য ব্যাপারটিকে আরেকটু সহজ করে দেবার উদ্দেশ্য নিয়েই আমার আজকের এই লেখাঃ চেক লেখার নিয়ম আর সাথে থাকছে আরও অনেক কিছুই।

আজকের লেখায় যা থাকছে

চেক কি?

প্রথমে আসুন জেনে নেই চেক আসলে কি, চেক দেখতে কেমন হয়, চেক কিভাবে পেতে পারেন ইত্যাদি নানা ব্যাপার স্যাপার।

চেক একটি ইংরেজি শব্দ, ইংরেজি ভাষায় একে লেখা হয় Cheque। এটি একটি হস্তান্তরযোগ্য ব্যাংক দলিল বা ডকুমেন্ট যার মাধ্যমে ব্যাংকের আমানতকারি লিখিত ও নিঃশর্তভাবে চেকের বাহককে নির্দিষ্ট পরিমান অর্থ দিতে বাধ্য থাকে।

এটি বিশেষভাবে মুদ্রিত একটি কাগজ বা দলিল যা ব্যাংক তার গ্রাহকের হিসাব নম্বরের বিপরীতে প্রদান করে থাকে। নবম শতাব্দি থেকে চেকের ব্যবহার শুরু হয় এবং আজ পর্যন্ত এর ব্যবহার চলে আসছে জনপ্রিয়তার সাথে যদিও এর সাথে আরও কিছু বিকল্পও চলে এসেছে।

চেক দেখতে কেমনঃ চেকের পরিচয়

সাধারণত চেক একটি কাগজে বিশেষ ভাবে মুদ্রিত থাকে, বিশেষভাবে মুদ্রিত মানে এই কাগজে বেশ কিছু সিকিউরিটির ব্যাপার রয়েছে যাতে কেও নকল করতে না পারে। একটি চেকের মধ্যে যে বিষয়গুলো থাকে তার মধ্যে নিচের অংশগুলো অন্যতম।

চেক

  • ব্যাংকের নাম এবং শাখাঃ গ্রাহক যে ব্যংকের যে শাখায় একাউন্ট খুলেছে তার নাম।
  • চেক নাম্বারঃ প্রতিটি চেকের একটি নাম্বার থাকে, ঠিক টাকার মত।
  • একাউন্টের নাম ও নাম্বরঃ যার নামে একাউন্ট তার নাম এবং একাউন্ট নাম্বার।
  • তারিখ লেখার জায়গাঃ তারিখ লেখার জায়গা।
  • পে টুঃ এখানে যাকে চেক দিতে চান তার নাম লেখার জায়গা।
  • দ্য সাম অফঃ কত টাকা দিতে চান তার পরিমান কথায় লেখার জায়গা।
  • টাকার পরিমানঃ এখানে টাকার পরিমান অংকে লেখার জায়গা।
  • সিগ্নেচারঃ যার একাউন্ট তার সিগ্নেচারের জায়গা থাকে।

এছাড়াও চেকের সাধারণত দুইটি অংশ থাকে। একটি অংশ ব্যাংকে জমা দেবার জন্য আরেকটি অংশ থাকে যেটি একাউন্ট হোল্ডার তার কাছে সংরক্ষন করতে পারেন ভবিষ্যৎ রেফারেন্সের জন্য। সেখানে ব্যবহারকারি তার নিজের স্বাক্ষর সহ নোট লিখে রাখতে পারেন।

চেক লেখার উদ্দেশ্য

আপনি কেন চেক লিখবেন? চেক লেখার প্রয়োজনীয়তাই বা কি? ধরেন আপনি কাওকে পেমেন্ট করতে চাচ্ছেন। আপনি চাইলে তাকে ক্যাশ পেমেন্ট করতে পারেন আবার যদি চান তাকে চেকের মাধ্যমেও পেমেন্ট করতে পারেন।

ক্যাশ টাকা পেমেন্ট করতে চাইলে আপনার নিজেকে টাকা তুলে তাকে সরাসরি দিতে পারেন, এতে অনেক ঝামেলা। কারণ ক্যাশ নিয়ে চলাচলও অনেক রিস্কের ব্যাপার। আর চেকের মাধ্যমে তাকে পেমেন্ট করলে আপনাকে এই ঝামেলা পোহাতে হবেনা।

একই সাথে চেকের আরেকটি সুবিধা হল যাকে আপনি চেকের মাধ্যমে পেমেন্ট করছেন সে অর্থ প্রাপ্তি কোনভাবেই অস্বিকার করতে পারবেনা। কারণ সে যখন ব্যাংক থেকে চেক ভাঙ্গিয়ে ক্যাশ করতে যাবে সেখানে তার নির্দিষ্ট কিছু ডকুমেন্ট দিয়ে ( যেমন- এনআইডি) তারপর টাকা তুলতে হবে। ফলে একটি অথেন্টিক ডকুমেন্ট রয়ে যাবে। আপনি থাকবেন নিশ্চিন্ত।

চেক লেখার সঠিক নিয়ম

উপরে আমি চেকের বিভিন্ন অংশের বর্ণনা দিয়ে দিয়েছি। আপনি হয়ত বুঝে গেছেন কিভাবে চেক লিখতে হয়। যদি না বুঝে থাকেন তাহলে আপনার জন্য আরও বিশদভাবে আলোচনা করছি।

প্রথমেই লিখবেন তারিখ

তারিখ লেখাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ চেক সাধারণত চেকের তারিখ থেকে ৩ মাস বৈধ থাকে। সুতরাং আপনি কাওকে চেক দিতে চাইলে সঠিক তারিখ লিখুন। কোন কাটা-কাটি করবেন না। তারিখ লেখার কোন ফরম্যাট থাকলে সেই ফরম্যাট অনুসরন করুন। দিন/মাস/বছর যেভাবে দিতে বলা হয়েছে ঠিক সেভাবেই লিখুন।

চেক কাকে দিচ্ছেন

যাকে চেক দিচ্ছেন তার নাম পরিস্কার অক্ষরে বাংলা কিংবা ইংরেজিতে লিখুন। কে ব্যংকে গিয়ে টাকা তুলবে সেটা সঠিক জানা না থাকলে শুধু ক্যাশ লিখে দিতে পারেন। Pay to ঘরে এই ইনফরমেশন দিন। আবার বলছি স্পষ্ট অক্ষরে লিখুন। কোন প্রকার কাটাছিড়া করবেন না।

যদি কোন প্রতিষ্ঠানের নামে চেক দিতে চান তাহলে এখানে প্রতিষ্ঠানের নাম লিখবেন।

টাকার পরিমান অংকে লিখুন

যেই ঘরে টাকার পরিমান লিখতে বলা হয়েছে সেখানে টাকার পরিমান অংকে লেখুন। অংকে লিখার পর সামনে পেছনে = চিহ্ন দিয়ে দিন। এতে অন্য কেও আর আগে-পরে কোন নতুন ডিজিট বসাতে পারবেনা। এখানেও কোন কাটাকাটি না করে স্পষ্ট অক্ষরে লিখুন।

টাকার পরিমান কথায় লিখুন

The Sum of Taka যেখানে লিখা আছে তার সামনে টাকার পরিমান কথায় লিখুন। লেখার সময় সাবধান হোন। আমাদের মাঝে অনেকের চেক লেখার অভ্যাস কম হওয়ায় অনেক সময় ভুল করে থাকেন তাই লিখার সময় সতর্ক হোন। বানান ভুল করবেন না। সন্দেহ থাকলে গুগল করে দেখে নিন।

সিগনেচার করুন

ডান দিকের নিচের কোনায় দেখুন সিগনেচারের জায়গা রয়েছে। আপনি ব্যআংক একাউন্ট খোলার সময় যে সিগনেচার করেছিলেন, সেই সিগনেচার করতে হবে। তা নাহলে ব্যাংক আপনার চেক রিজেক্ট করে দিবে। মনে রাখবেন তারা আগের দেয়া সিগনেচারের সাথে আপনার চেকের সিগনেচার মিলিয়ে দেখবে। সুতরাং সিগনেচার করার সময় সাবধান হোন।

ফাঁকা অংশ কি করবেন

টাকার অংক লেখার পর ফাঁকা অংশ একটা লাইন টেনে দিতে পারেন। কথায় টাকার অংক লেখার পর বাংলায় লিখলে শেষে মাত্র আর ইংরেজিতে লিখলে শেষে Only লিখবেন। এতা মাস্ট। মনে রাখবেন।

বাংলা-ইংরেজি মিলিয়ে লেখা

আপনি যদি বাংলায় চেক লিখেন তাহলে আপনাকে পুরো চেক বাংলাতেই লিখতে হবে। আবার যদি ইংরেজিতে চেক লিখেন তাহলে আপনাকে পুরো চেক ইংরেজিতেই লিখতে হবে। কোনভাবেই দুই ভাষার মিশ্রন করা যাবেনা। তাহলে আপনার চেক গ্রান্টেড হবেনা। তাই সতর্ক হোন। চেক লেখার নিয়ম ক্ষেত্রে এটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।

একাউন্ট পে চেক কি

একাউন্ট পে চেককে আবার কখনও কখনও ক্রস চেক বা দাগ কাটা চেক বলা হয়। এই চেক এর মাধ্যমে কেও ক্যাশ টাকা তুলে নিতে পারবেনা। আপনি  Pay to ঘরে যার নাম বা যে প্রতিষ্ঠানের নাম লিখবেন শুধুমাত্র সেই ব্যক্তির একাউন্টেই টাকাটি জমা হবে।

এই পদ্ধতিতে চেক ইস্যু করলে তা অনেক নিরাপদ থাকে। নির্দিষ্ট একাউন্টের বাইরে টাকা জমা হবার কোন সুযোগ নাই। আর আপনাকে Pay to ঘরে যার নাম বা যে প্রতিষ্ঠানের নাম লিখার সময় সঠিক নাম লিখতে হবে, মানে যে নামে একাউন্ট রয়েছে সেই নাম লিখতে হবে। তাহলে যাকে চেক দিচ্ছেন তিনি যকোন ব্যাংকেই তার একাউন্ট থাকুক না কেন টাকা ক্যাশ করতে পারবেন।

একাউন্ট পে চেক কিভাবে লিখবেন

একাউন্ট পে চেক লিখা এবং সাধারণ চেক লেখার মধ্যে তেমন কোন পার্থক্য নেই। শুধু চেকের বাম দিকের উপরের কোনায় দুইটি দাগ দিয়ে A/C লিখলেই চলে। নিচের ছবিটি খেয়াল করুন।

একাউন্ট পে চেকের সতর্কতা

যদিও বলা হয় একাউন্ট পে চেক সম্পূর্ণ নিরাপদ কিন্তু আসলে তা নয়। একই নামের অন্য কোন ব্যক্তির ব্যাংকে একাউন্ট থাকলে তার হাতে যদি চেক পরে তাহলে তিনি বিনা বাধায় তার একাউন্টে টাকা জমা করে নিতে পারবেন। তবে এমন হবার সম্ভাবনা খুব কম। তবে, যদি কেও চেক কুরিয়ার করে পাঠান তাহলে এই রিস্ক থেকেই যায়। তাই সরাসরি হাতে হাতে চেক দিলে আর কোন রিস্ক নেই।

আশা করি বুঝতে পেরেছেন।

ইস্যু করা চেক কিভাবে বন্ধ করবেন?

অনেক সময় এমন হতে পারে চেক ইস্যু করার পর চেকটি হারিয়ে গেল, সেক্ষেত্রে আপনি কি করবেন। আপনার তখন কাজ হবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকে জানানো এবং এই চেকটি যেন অনার করা না হয় সে ব্যাপারে রিকুয়েষ্ট করে রাখা। আগের দিনে এসব ক্ষেত্রে ব্যাংকে সরাসরি যেতে হত, কিন্তু এখনকার আধুনিক যুগে আপনি কল সেন্টারে ফোন করে এই রিকুয়েষ্ট করে রাখতে পারেন।

চেক লিখতে ভুল হলে কি করবেন

আমরা যদিও অনেক সতর্ক হয়ে চেক লিখি তারপরেও ভুল হতেই পারে। চেক লিখতে গিয়ে ভুল হলে তা এক টানে কেটে দিবেন। ঘষা-মাজা করে কাটবেন না। তাহলে চেক রিজেক্ট হয়ে যাবে। এক টানে কেটে দিন তারপর পাশে স্পষ্ট অক্ষরে আবার লিখুন এবং পাশে আপনার সিগনেচার দিয়ে দিন। তাহলে আর কোন সমস্যা হবেনা। তবে, চেষ্টা করবেন যেন কোন ভাবেই ভুল না হয়।

চেক দিয়ে টাকা তুলবেন কিভাবে

কেও আপনাকে আপনার নামে চেক ইস্যু করলে আপনি কিভাবে টাকা তুলবেন? খুবই সহজ কাজ। চেকটি  নিয়ে যে ব্যাংকের চেক আপনার কাছাকাছি ঐ ব্যাংকের যেকোন শাখায় চলে যান। মনে রাখবেন সকাল ১০টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত বাংলাদেশের যেকোন ব্যাংক সার্ভিস দিয়ে থাকে।

এই নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আপনি ব্যাংকে ঢুকে যান। সাথে নিবেন আপনার ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি। টাকা উত্তলোনের জন্য যেই কাউন্টার সেখানে লাইনে দাঁড়িয়ে যান। আপনার সিরিয়াল এলে কাউন্টারে আপনার চেকটি দিন।

যে একাউন্টের চেক ঐ একাউন্টে পর্যাপ্ত ব্যালেন্স থাকলে আপনাকে টাকা দিয়ে দেয়া হবে। চেকের পেছনে আপনাকে দুইটি সাইন করতে হতে পারে। আর ন্যাশনাল আইডি কার্ডের কপি তারা জমা রাখবে।

চেকের বিকল্প কি

দিন দিন ব্যাংকিং ব্যবস্থা আধুনিক হচ্ছে। আমাদের দেশ বাংলাদেশও পিছিয়ে নেই। এখনকার দিনে চেকের বেশ কিছু বিকল্প তৈরি হয়েছে। এর মধ্যে দুইটি বিকল্প খুবই জনপ্রিয়;

  • এটিএম কার্ড (ATM Card)
  • অনলাইন ট্রান্সফার (Online Transfer)
  • মোবাইল ব্যাংকিং (Mobile Banking)
  • পিন কোড ট্রান্সফার (Pin Code Transfer)

এটিএম কার্ড (ATM Card)

এটিএম কার্ড এক প্রকারের প্লাস্টিক কার্ড যার মাধ্যমে ব্যাংকের নির্দিষ্ট বুথ থেকে খুব সহজে ইলেক্ট্রনিক উপায়ে টাকা তোলা যায়। প্রতিটি এটিএম কার্ড এর একটি গোপন পিন নম্বর থাকে। কার্ডটি মেশিনে দেওয়ার পর পিন কোড ইনপুট করলে তারপরে টাকার এমাউন্ট উল্লেখ করলে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই মেশিন থেকে টাকা নেয়া সম্ভব হয়। এটা খুব সহজ একটি পদ্ধতি। যে কেও এইভাবে তাকা উত্তলোন করতে পারে।

এটিএম মেশিনে টাকা উত্তলোন
এটিএম মেশিনে টাকা উত্তলোন

এটিএম কার্ড ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা সতর্কতা অবলম্বন করতে হয়, যেমন- পিন কোড কাওকে দেয়া যাবেনা, নিজের পিন কোড নিজের কাছেই রাখতে হয়। এটিএম কার্ড  নিজের কাছেই রাখা উচিত। অন্য কারও কাছে নয়।

অনলাইন ট্রান্সফার (Online Transfer)

চেক ব্যবহার না করেও আপনি কারও একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করে দিতে পারেন। আপনার কোন একাউন্ট পে চেক ইস্যু করতে হবেনা। তবে যা লাগবে তা হল, আপনার একাউন্টে অনলাইন ব্যাংকিং চালু থাকতে হবে। যদি অনলাইন ব্যাংকিং চালু না থাকে আজই আপনার ব্যাংকে যোগাযোগ করে চালু করে নিতে পারেন।

কিভাবে করবেন অনলাইন ট্রান্সফার

আপনার যদি অনলাইন ব্যাংকিং চালু থাকে তাহলে আপনার অবশ্যই একটি আইডি এবং পাসওয়ার্ড রয়েছে। প্রথমে যে ব্যাংকে আপনার একাউন্ট সেই ব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রবেশ করুন। আইডি পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লগইন করুন। যাকে টাকা ট্রান্সফার করতে চান তার একাউন্ট নাম এবং একাউন্ট নাম্বারটি জেনে নিয়ে তাকে আপনার বেনিফিসিয়ারি হিসেবে যুক্ত করে নিন।

এবার ট্রান্সফার অপ্সনে ক্লিক করে কত টাকা পাঠাতে চান তা লিখে ট্রান্সফার বাটনে ক্লিক করে পাঠিয়ে দিন। সাধারণত একই ব্যাংকে হলে  সাথে সাথে তার একাউন্টে টাকা চলে যাবে, আর অন্য ব্যাংক হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে টাকা চলে যাবে। তবে, এখন আধুনিক যুগ, NPSB মেথডে টাকা পাঠালে যে কোন ব্যাংকে সাথে সাথে টাকা চলে যাবে। আগে শুধু BEFTN পদ্ধতি ছিল। এতে ২৪ ঘন্টা সময় লেগে যেত।

এছাড়াও আপনি চাইলে আপনার এটিএম কার্ড দিয়ে একই ব্যাংকের একাউন্টে টাকা ট্রান্সফার করতে পারবেন। একাউন্ট নাম্বার লিখার সময় সতর্ক থাকুন।

বিভিন্ন ব্যাংকে অনলাইনে টাকা ট্রান্সফারের নির্দিষ্ট লিমিট রয়েছে ০-৫,০০,০০০.০০ (পাঁচ লাখ) টাকা পর্যন্ত। আপনার ব্যাংকের লিমিট কত তা জেনে নিতে ভুলবেন না।

মোবাইল ব্যাংকিং (Mobile Banking)

চেক ছাড়া আধুনিক উপায়ে টাকা পাঠানোর আরেকটি পদ্ধতি হল মোবাইল ব্যাংকিং। আমাদের দেশে বিকাশ, রকেট, উপায়, নগদ সহ আরও অনেক মোবাইল ব্যাংকিং সার্ভিস চালু রয়েছে। আপনি এর যে কোন মাধ্যমেই চাক ছাড়াই তাকা পাঠাতে পারেন।

আপনি চাইলে আপনার ব্যাংক থেকে টাকা অনলাইনে মোবাইল ব্যাংকিং একাউন্টে নিয়ে আসতে পারেন। মোবাইল ব্যাংকিং এর এড মানি অপশনে গিয়ে আপনার এটিএম কার্ড থেকে টাকা মোবাইল ব্যাংকে টাকা ডিপোজিট করে আবার টাকা যাকে পাঠাতে চান তার মোবাইল একাউন্টে টাকা সেন্ড মানি করে দিতে পারেন।

পুরো কাজটি করার জন্য আপনাকে মোটেই ঘরের বাইরে যাবার প্রয়োজন পরবেনা। আধুনিক যুগে ভাই সবই সম্ভব।

পিন কোড ট্রান্সফার (Pin Code Transfer)

টাকা দেবার এই পদ্ধতিটি অনেকেই জানেন না। আপনি যাকে টাকা দিতে চান তাকে বলুন এটিএম বুথে যেতে। এবার আপনি আপনার অনলাইন ব্যাংকিং এর এপস কিংবা ওয়েবসাইটে ঢুকুন। যাকে টাকা দিতে চান তার মোবাইল নম্বর এন্ট্রি করুন। কত টাকা দিতে চান তা লিখে ফেলুন। দেখবেন, এটিএম বুথে যে আছে তার মোবাইলে একটি টেম্পোরারি কোড চলে যাবে। সেই কোড ব্যবহার করে তিনি ঐ বুথ থেকে সমপরিমান (আপনি যা লিখেছিলেন) টাকা তুলতে সক্ষম হবেন।

চেক বই কিভাবে পাবেন

চেকবই কিভাবে পাবেন? চেক লিখার নিয়ম জানার আগেই আসলে এই ব্যাপারটি বলা উচিত ছিল। আসলে আপনি যখন কোন ব্যাংকে একাউন্ট খুলবেন তখনই আপনাকে চেক বইয়ের জন্য রিকুয়েষ্ট করতে হবে। ৩-৫ কর্ম দিবসের মধ্যেই আপনি চেক বই পেয়ে যাবেন। সাধারণত আপনার বাসার ঠিকানায় ডাকযোগে পাঠিয়ে দেয়া হবে।

 চেক বই আপনার হাতে আসা মাত্রই কিন্তু আপনি তা ব্যবহার করতে পারবেন না। আপনাকে সেটি একটিভ করে নিতে হবে। এটা তেমন কোন কঠিন কাজ নয়। আপনার ব্যাংকের কল সেন্টারে কল করে নির্দিষ্ট কিছু প্রশ্নের জবাব দিয়ে আপনি আপনার চেক বই একটিভ করে নিতে পারবেন কয়েক মিনিটের মধ্যেই।

এটা জাস্ট একটা সিকিউরিটি। আর কিছুই নয়। যাতে অন্য কারও হাতে চেক বই গেলে সে আপনার চেক বইয়ের মিস ইউস না করতে পারে। চেক লেখার নিয়ম নিয়ে আমাদের এই ব্লগ।

এটিএম কার্ড কিভাবে একটিভ করবেন

চেক বইয়ের মত এটিএম কার্ড ও একটিভ করে নিতে হয়। কাজটি একই ভাবেই করতে পারবেন। চেক বইয়ের সাথে এর ভিন্নতা হল আপনাকে পিন কোড জেনারেট করে নিতে হয় পছন্দমত। কল সেন্টারে কল করে ইন্সট্রাকশন ফলো করলে আপনি নিজেই পেরে যাবেন। কোন চিন্তাই করবেন না।

ভরসা রাখুন আধুনিক ব্যাংকিং ব্যবস্থার উপর

আধুনিক যুগে ব্যাংকিং ব্যবস্থা খুবই এগিয়ে গেছে। বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে আমাদের দেশও এগিয়ে গেছে। তাই নিশ্চিন্তে আপনি এদের উপর ভরসা করতে পারেন। অনলাইন- অফলাইন যেই সার্ভিস আপনি নেন না কেন, চিন্তার কোন কারণ নেই। চেক লেখার নিয়ম ব্লগ লিখতে এসে অনেক কিছুই লিখে ফেললাম। আশা করি আপনাদের কাজে লেগে যাবে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Previous articleকম্পিউটার বেসিক নলেজ জানুন এক নিমিষে।
Next articleব্যাংক একাউন্ট খোলার নিয়ম জানুন নিরাপদ রাখুন আপনার টাকা।
যে ব্যর্থ সে অজুহাত দেখায়, যে সফল সে গল্প শোনায়। আমি অজুহাত নয় গল্প শোনাতে ভালবাসি। আসুন কিছু গল্প শুনি, নিজের গল্প অন্যকে শুনাই।