কম্পিউটার বেসিক নলেজ

একটা সময় ছিল যখন কোন চাকরির ইন্টারভিউ দিতে গেলে আপনাকে কম্পিউটার বেসিক নলেজ আছে কিনা তা জিজ্ঞেস করা হত, কিন্তু এখনকার দিনে ধরেই নেয়া হয় আপনি কম্পিউটার বেসিক নলেজ নিয়েই জন্মেছেন। তবে, কম্পিউটারের কোন স্পেসিফিক সফটওয়্যার নিয়ে আপনাকে জিজ্ঞেস করতেই পারে।কম্পিউটার বেসিক নলেজ এখনকার দিনে আপনাকে জানতেই হবে। বর্তমান সময়ে কম্পিউটার বেসিক নলেজ কোন এক্সট্রাঅরডিনারি কুয়ালিটির মধ্যে পরেনা, সবাই ধরেই নেয় আপনার এবিষয়ে বেসিক নলেজ রয়েছে। তাই আপনার যদি কম্পিউটার বেসিক নলেজ না থাকে, আপনি পিছিয়ে পরেছেন। একারনেই আপনাকে এটি জানতেই হবে। এটা অনেকটা মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম জানার মতই খুবই সাধারণ ব্যাপার হয়ে দাড়িয়েছে।

আমি হঠাত করেই খেয়াল করে দেখলাম আমাদের অনেকেই কম্পিউটার সম্পর্কে তেমন কিছুই জানেনা। বাংলাদেশের জনগনের একটা বড় অংশ কম্পিউটার মানেই গান শুনা, সিনেমা দেখা আর গেম খেলা। কম্পিউটার দিয়ে যে আরও কত কিছুই করা যায় সেটা নিয়ে তাদের ধারনাই নেই। তবে আমার আজকের লেখার উদ্দেশ্য আসলে কম্পিউটার দিয়ে কি কি করে যায় তা নয়। আমার আজকের লেখার আসল কারণ কম্পিউটার নিয়ে বেসিক নলেজ আপনাদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া, অবশ্যই আপনারা যারা জানেননা তাদের জন্য। আশা করি লেখাটি আপনাদের অনেক কাজে লাগবে। তাহলে আসুন দেরি না করে শুরু করা যাক।

কম্পিউটার কি?

কম্পিউটার (Computer) শব্দটি এসেছে কম্পিউট(Compute) শব্দ থেকে। কম্পিউট(Compute) একটি গ্রীক শব্দ যার অর্থ গননা করা। কিন্তু এখনকার দিনে কম্পিউটার শুধুমাত্র গননা করার কাজে ব্যবহৃত হয়না। কম্পিউটার এর কাজ এখন অনেক ব্যাপক।

কম্পিটারের আধুনিক সংজ্ঞা এভাবে দেয়া যেতে পারে, কম্পিউটার এমন একটি আধুনিক বৈদ্যুতিক যন্ত্র যা বিভিন্ন রকম তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে এবং নানা উপায়ে গৃহীত তথ্যকে বিভিন্ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে দ্রুত গতিতে তা বিশ্লেষণ করে ব্যবহারকারিকে সরবরাহ করে থাকে।

কম্পিউটার আবিস্কারের ইতিহাস

প্রাগৈতিহাসিক যুগে গননার জন্য ব্যবহৃত বিভিন্ন যন্ত্রের আবিস্কারকেই কম্পিউটার আবিস্কারের ইতিহাস বলে ধরে নেয়া হয়। পরবর্তীতে খ্রিষ্টপূর্ব ২৪০০ সালে ব্যাবিলনে অ্যাবাকাস (Abacus) নামের গননা যন্ত্রকেই কম্পিউটারের ইতিহাসে প্রথম যন্ত্র হিসেবে ধরা হয়। তবে আধুনিক কম্পিউটার আবিস্কারের ইতিহাস মোটেই তা নয়। বিশ শতকের মধ্যভাগ থেকেই আধুনিক কম্পিউটারের আসল বিকাশ ঘটতে শুরু করে যার আধুনিক রুপই আমাদের আজকের দিনের কম্পিউটার। আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে, ১৯৭১ সালে মাইক্রোপ্রসেসরের আবিস্কারের পর থেকেই মূলত পার্সোনাল কম্পিউটার বা পিসির ধারনা তৈরি হয়। আধুনিক সভ্যতার বিকাশ এবং অগ্রগতিতে কম্পিউটারের অবদান অনস্বীকার্য।

চার্লস ব্যাবেজকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক বলা হয়। তার তৈরি করা মেকানিক্যাল ইঞ্জিনই প্রথম পাঞ্চ কার্ড দিয়ে মেমোরি ব্যবহার করে। আর বাংলাদেশে প্রথম কম্পিউটার আসে ১৯৬৪ সালে।

যেহেতু আমরা কম্পিউটার নিয়ে বেসিক ধারনা নিব তাই আমি মনে করছি এর চেয়ে বেশি কিছু জানার আপাতত প্রয়োজন নেই।

কম্পিউটারের যন্ত্রাংশগুলো কি কি?

কম্পিউটার নিয়ে আপনি যদি জানতে চান তাহলে আপনাকে কম্পিউটারের নানা প্রকার যন্ত্র সম্পর্কে জানতে হবে। প্রাথমিকভাবে কম্পিউটারের যন্ত্রাংশগুলোকে দুইভাগে ভাগ করা যেতে পারে। যা হলঃ

  • ইনপুট ডিভাইস
  • আউটপুট ডিভাইস
  • সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট
  • মেমোরি

ইনপুট ডিভাইস

কম্পিউটার যেসকল যন্ত্রের মাধ্যমে ডাটা বা তথ্য সংগ্রহ করে থাকে তাকে বলা হয় ইনপুট ডিভাইস। একটু মনে করে দেখুন ত কম্পিউটার তার কোন কোন ডিভাইস বা যন্ত্রের মাধ্যমে তথ্য গ্রহন করে থাকে। হ্যা, আপনি ঠিকই ধরেছেন। ইনপুট ডিভাইসের মধ্যে রয়েছে মাউস, কিবোর্ড, বারকোড রিডার, ফিংগার প্রিন্ট রিডার, স্ক্যানার ইত্যাদি।

একটু খেয়াল করেই দেখুন আমরা এইসব ইনপুট ডিভাইসের মাধ্যমে আমরা কম্পিউটারে সংকেত বা সিগ্ন্যাল বা ইনপুট দিয়ে থাকি।

আউটপুট ডিভাইস

কম্পিউটার যেসকল যন্ত্রের মাধ্যমে ডাটা বা তথ্য সংগ্রহ করে তা প্রসেসিং করার পর ইউজারকে প্রদান করে থাকে তাই আউটপুট ডিভাইস। একটু চিন্তা করে দেখুন ত আপনি বলতে পারেন কিনা, কম্পিউটারের আউটপুট ডিভাইসগুলো কি কি হতে পারে। হয়ত আপনি ঠিকই ধরেছেন। কম্পিউটারের জনপ্রিয় কয়েক আউটপুট ডিভাইসগুলোর মধ্যে রয়েছে মনিটর, প্রিন্টার, স্পিকার ইত্যাদি।

সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট

আমরা ইনপুট এবং আউটপুট ডিভাইস নিয়ে জেনেছি, এবার জানব কম্পিউটারের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিট (Central Processing Unit) বা সংক্ষেপে যাকে বলে সিপিইউ (CPU)। মূলত এই অংশটিই গৃহীত তথ্যগুলোকে প্রসেসিং করে ইউজারকে প্রদান করে থাকে।

মেমোরি

মেমোরি বা স্মৃতি হল কম্পিউটারের বিভিন্ন তথ্য উপাত্ত জমা রাখার জায়গা। কম্পিউটারের তথ্য-উপাত্ত জমা রাখার জন্য সাধারণত যে ডিভাইসটি ব্যবহার করা হয় তা হল হার্ড ডিস্ক ড্রাইভ (HDD)। এটা কম্পিউটারের স্থায়ী মেমোরি। এছাড়াও আরও একটি মেমোরি প্রয়োজন হয় যাকে বলে র‍্যাম (RAM)। এটি মূলত আস্থায়ি মেমোরি। মেমোরি সবমিলিয়ে তিন প্রকার হয়ঃ

  • হার্ডডিস্ক (HDD)
  • র‍্যাম (RAM)
  • রম (ROM)

তিন প্রকারের মেমোরি বুঝার জন্য আমি আপনাকে একটি খুবই সহজ উদাহরন দিতে পারি। এতে আপনি হয়ত বিষয়টি ক্লিয়ার হতে পারবেন। ধরে নিন, আপনি পড়ার টেবিলে পড়তে বসেছেন। আপনার সামনে আছে পড়ার টেবিল। আপনার বই খাতা রয়েছে পাশের বুক সেলফে।

এখান আপনি পড়ার সময় বুক সেলফ থেকে বই নিয়ে টেবিলে পড়ছেন আবার পরা শেষ হলে বই রেখে দিচ্ছেন। এখানে আপনার বুক সেলফ হল আপনার হার্ড ডিস্ক। পড়ার টেবিল হল র‍্যাম।

আর রম হল এমন এক মেমোরি যেখান থেকে শুধুমাত্র ডাটা পড়া যায়, কিন্তু কিছু এডিট করা বা লিখা যায়না। যেমন- সিডি বা ডিভিডি রম এর উদাহরণ।

কিন্তু হার্ড ডিস্ক বা র‍্যামের ডাটা আপনি চাইলে মুছে ফেলতে বা ডিলিট করতে পারবেন। সিডি বা ডিভিডির ডাটা আপনি মুছতে পারবেন না। আশা করি কিছুটা হলেও বুঝতে পেরেছেন।

কম্পিউটারের প্রধান দুইটি অংশ

কম্পিউটারের প্রধান দুইটি অংশ হলঃ

  • হার্ডওয়্যার
  • সফটওয়্যার

হার্ডওয়্যার কি

সহজ ভাষায় বলি একটি কম্পিউটারের যে সকল অংশ আপনি দেখতে পাচ্ছেন তাই কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার। এই যেমন উদাহরণ হিসেবে বলা যায় মনিটর, মাউস, প্রিন্টার, কিবোর্ড, স্ক্যানার ইত্যাদি সব। অর্থাৎ সকল কম্পিউটারের যন্ত্রাংশই হল কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার।

সফটওয়্যার কি

কম্পিউটারের বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করার লক্ষ্যে কম্পিউটারের ভাষায় লিখিত সাজানো নির্দেশমালা প্রোগ্রাম। প্রোগ্রাম অথবা কতগুলো প্রোগ্রাম সমষ্টি যা কম্পিউটারের হার্ডওয়্যার ও ব্যবহারকারীর মধ্যে সম্পর্ক সৃষ্টির মাধ্যমে হার্ডওয়্যারকে কার্যক্ষম করে তাকেই সফটওয়্যার বলা হয়ে থাকে। সফটওয়্যার আবার দুই ধরনের হয়ে থাকে।

  • সিস্টেম সফটওয়্যার
  • এপ্লিকেশন সফটওয়্যার

সিস্টেম সফটওয়্যার

সিস্টেম সফটওয়্যার হল এমন কিছু যা প্রোগ্রাম কিংবা প্রোগ্রামের সমষ্টি যা কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশকে একত্রিত করে কাজের সমন্বয় রক্ষা করে ব্যবহারকারিকে কাজের পরিবেশ প্রদান করে থাকে। এখনকার সময়ের জনপ্রিয় কিছু সিস্টেম সফটওয়্যার হল লিনাক্স, ম্যাকএস, উইন্ডোজ ইত্যাদি।

এপ্লিকেশন সফটওয়্যার

বিভিন্ন রকম ব্যবহারিক সমস্যা সমাধান করা বা বিভিন্ন রকম তথ্য-উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণের জন্য ব্যবহৃত প্রোগ্রামকে এপ্লিকেশন সফটওয়্যার বলে। এসব এপ্লিকেশন সফটওয়্যারের মাধ্যমে আপনি প্রয়োজন মত বিভিন্ন রকম কাজ করতে পারবেন। যেমন- মাইক্রোসফট ওয়ার্ড এপ্লিকেশনের মাধ্যমে আপনি লেখালেখির কাজ করতে পারবেন, মিডিয়া প্লেয়ারের মাধ্যমে আপনি ভিডিও দেখতে ও গান শুনতে পারবেন, এডোবি ফটোসপের মাধ্যমে আপনি ছবি এডিটের কাজ করতে পারবেন, অটোক্যাড দিয়ে আপনি বিভিন্ন ইঞ্জিনিয়ারিং ডিজাইন করতে সক্ষম হবেন।

কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশের পরিচয়

কম্পিউটারের বিভিন্ন যন্ত্রাংশ সম্পর্কে জানাটাও কম্পিউটার বেসিক নলেজ এর মধ্যে পরে থাকে। কম্পিউটারের যন্ত্রংশগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ

  • হার্ড ডিস্ক ড্রাইভঃ এতে ডাটা সংরক্ষন করা হয়। এটা কেন্দ্রীয় তথ্য সংরক্ষন ব্যবস্থা। রিড এবং রাইট দুইই করা যায়।
  • প্রসেসরঃ সকল ডাটা এখানে প্রসেসিং করা হয়। মানুষের ব্রেইনের সাথে তুলনা করা হয়।
  • পাওয়ার সাপ্লাইঃ পাওয়ার সাপ্লাই বক্স সকল যন্ত্রাংশকে প্রয়োজন মত বিদ্যুৎ সরবরাহ করে থাকে। মনে রাখবেন সকল যন্ত্রাংশ সমান পাওয়ার নেয় না। পাওয়ার সাপ্লাই বক্স তাই প্রয়োজন অনুসারে পাওয়ার দিয়ে থাকে।
  • মাদার বোর্ডঃ এখানে সকল যন্ত্রাংশ পরস্পরের সাথে সংযুক্ত করা হয়।
  • গ্রাফিক্স কার্ডঃ মাদারবোর্ডের সাথে মনিটরের কানেক্টিভিটি করে গ্রাফিক্স কার্ড। গ্রাফিকাল সকল কাজ এই যন্ত্রাংশ করে থাকে। এর ক্যাপাসিটি কম বেশি হতে পারে।
  • সাউন্ড কার্ডঃ স্পিকারের সাথে মাদারবোর্ডের কানেক্টিভিটি তৈরি করে থাকে। সাউন্ড প্রসেস করে এই যন্ত্র। ভাল সাউন্ড কার্ডে ভাল সাউন্ড ইফেক্ট পাওয়া যায়।
  • র‍্যামঃ এটি অস্থায়ী মেমোরি। কাজের সময় যতটুকু প্রয়োজন হয় ঠিক ততটুকুই ব্যবহার করা হয়।
  • সিডি/ডভিডি রমঃ এটাও ডাটা স্টোরেজের জন্য তবে এটি রিড অনলি মেমোরি। শুধু রিড করা যায় রাইট করা যায়না।
  • মনিটরঃ এটা একটি আউটপুট ডিভাইস। ব্যবহারকারি এখানে তার আউটপুট দেখতে পায়।
  • স্পিকারঃ এটা একটি আউটপুট ডিভাইস। ব্যবহারকারি এখানে তার আউটপুট শুনতে পায়।
  • কিবোর্ড ও মাউসঃ এটা একটি ইনপুট ডিভাইস। ব্যবহারকারি এর মাধ্যমে তথ্য ইনপুট দিয়ে থাকে।
  • প্রিন্টার ও স্ক্যানারঃ এটা একটি আউটপুট ডিভাইস। এর মাধ্যমে আউটপুট নিয়ে থাকে।

কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে

কম্পিউটার কিভাবে কাজ করে এই প্রশ্নের উত্তর যদি গভীরে না যান তাহলে খুবই সহজ। কম্পিউটার তার ইউজার বা ব্যবহারকারির কাছ থেকে তথ্য গ্রহণ করে এবং তার সেন্ট্রাল প্রসেসিং ইউনিটে সেই ডাটা বা তথ্য প্রক্রিয়াজাত করে আবার ব্যবহারকারিকে রেজাল্ট আকারে ফেরত দেয়। যেমন আপনি যদি একটি ক্যাল্কুলেটরে ২+২ চাপেন তাহলে ক্যালকুলেটর তার ডিসপ্লেতে রেজাল্ট দেখাবে ৪। ব্যাপারটি আসলে এরকমই।

কম্পিউটারের ভাষা কি

যদি বলি কম্পিউটার আসলে ০ আর ১ ছাড়া আর কিছুই বুঝেনা, আপনি কি অবাক হবেন? অবশ্যই অবাক করার মতই ব্যাপার। আর এই ০ আর ১ হল বিদ্যুতের উপস্থিতি আর অনুপস্থিতি। একে বলে বাইনারি সংখ্যা। কম্পিউটার আসলে এই দুইটি জিনিষ ছাড়া আর কিছুই জানেনা।

এটা আসলে মেশিন ল্যাঙ্গুয়েজ। এছাড়া বিভিন্ন সফটওয়্যার বা এপ্লিকেশন লেখা হয় প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজ দিয়ে। যেমন- সি, সি+, সি++ ইত্যাদি। আগে এই বিষয়গুলো পুরাটাই কোড নির্ভর ছিল। কিন্তু এখনকার দিনে প্রোগ্রামিং ল্যাঙ্গুয়েজগুলোর গ্রাফিক্যাল ইন্টারফেস আছে। ফলে ব্যাপারটি এখন আগে চেয়ে অনেক সহজ হয়েছে।

ইন্টারনেট কি?

বর্তমান সময়ে ইন্টারনেট আসলে কম্পিউটারকে একটি স্বয়ংসম্পূর্ণতা প্রদান করেছে, ইন্টারনেট সারা পৃথিবীর সকল কম্পিউটারকে একসাথে সংযুক্ত করেছে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমরা এক কম্পিউটার থেকে অন্য কম্পিউটারে ডাটা আদান-প্রদান করতে সক্ষম হই। এজন্য প্রতিটি কম্পিউটারের একটি এড্রেস বা ঠিকানা থাকে একেই বলা হয় আইপি এড্রেস (Internet Protocol Address)।

আমরা যখন কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করি তখন মূলত আমরা আরেকটি কম্পিউটারে প্রবেশ করি। এটি মূলত আইপি এড্রেস কে ডোমেইন নেম দিয়ে মাস্কিং করা একটি ঠিকানা। উদাহরণ স্বরুপ বলা যায় আমরা যদি প্রথম আলোর ওয়েবসাইটে ভিজিট করি তাহলে আমরা লিখি www.prothomalo.com । এটা লিখার পর আপনি প্রথম আলোর সার্ভার পিসিতে প্রবেশ করেন এবং সেখানে যেসব ডাটা দেখানোর ব্যবস্থা থাকে তা দেখতে পান।

এখানে prothomalo হল ডোমেইন নেম যার অভ্যন্তরে একটি আইপি এড্রেস রয়েছে যেতা দেখতে অনেকটা ১৯২.১৬৮.১০.২৫ এরকম। এ ধরনের সংখ্যা মনে রাখা কঠিন বলেই এটিকে মাস্কিং করে রাখা হয়।

ইমেইল কি?

ইলেকট্রনিক মেইল বা ইমেইল হল ইন্টারনেটের এক অভাবনীয় আবিস্কার। এক ডিভাইস থেকে অন্য ডিভাইসে ইলেক্ট্রনিক উপায়ে ইন্তারনেটের মাধ্যমে বার্তা প্রেরণ করাটাই আসলে ইমেইল।

আপনি যেমন ডাক বিভাগের সাহায্যে ঠিকানা উল্লেখ করে আরেক জনের কাছে  চিঠি আদান-প্রদান করতে পারেন ঠিক তেমনি ইন্টারনেট ব্যবহার করে ইমেইল একাউন্ট এর মাধ্যমে আরেকজনকে মুহুরতেই ইমেইল পাঠাতে পারবেন।

জনপ্রিয় কয়েকটি ইমেইল সার্ভিস প্রোভাইডার হল জিমেইল, ইয়াহু, হট মেইল ইত্যাদি। আপনার ইমেইলের পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রাখুন।

ইন্টারনেট কানেকশন কিভাবে নেবেন?

আজকাল ইন্টারনেট কানেকশন ছাড়া আসলে কারই চলেনা। যেকোন ধরনের মানুষের জন্যই আজকাল ইন্টারনেট একটি খুবই প্রয়োজনীয় একটা ব্যাপার। তাহলে কিভাবে পাবেন ইন্টারনেট কানেকশন? খুব সহজলোভ্য উপায় হল মোবাইল ইন্টারনেট। যদি মোবাইল ইন্টারনেট খুবই কস্টলি। তবে এতে আপনি মোবিলিটি পাচ্ছেন।

আর মোবাইল ইন্টারনেটকে মোবাইলের হটস্পট ব্যবহার করে সেই কানেকশন কম্পিউটার বা অন্য কোন ডিভাইসে ব্যবহার করতে পারবেন।

ইন্টারনেটের আরেকটি সহজলভ্য উপায় হল ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট। বাংলাদেশের প্রায় সব জায়গাতেই আপনি চাইলেই বাসায় ব্রডব্যান্ড কানেকশন নিতে পারবেন। ক্যাটফাইভ তা কিংবা অপ্টিক্যাল ফাইবার তারের মাধ্যমে এই কানেকশন দেয়া হয়ে থাকে। এরসব চাইতে বড় সুবিধা হল আনলিমিটেড ডাটা এবং লিমিটেড মাসিক চার্জ।

বাসায় ব্রড ব্যান্ড কানেকশন নিয়ে তাকে আপনি চাইলে রাউটার ব্যবহার করে বাসায় ওয়াইফাই করে নিতে পারবেন।

ওয়াই-ফাই কি?

আগে ইন্টারনেট ব্যবহার করা হত তারের মাধ্যমে। এখন আধুনিক যুগে ইন্টারনেটের ডাটাকে ফ্রিকুয়েন্সিতে রুপান্তর করে ছড়িয়ে দেয়া হয়। আপনি যে ডিভাইসে ইন্টারনেট ব্যবহার করবেন তাতে ওয়াইফাই রিসিভার থাকে যার মাধ্যমে ডিভাইসটি ইন্টারনেটে কানেক্টেড হয়।

আর যে ডিভাইস বা যন্ত্র ইন্টারনেট ডাটাকে ফ্রিকুয়েন্সিতে রুপান্তর করে তাকে বলা হয় রাউটার। খেয়াল করে দেখবেন আমাদের যাদের বাসায় ব্রড ব্যান্ড কানেকশন আছে তারা বাসায় একটি রাউটার রয়েছে। আপনার বাসার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডার একটি রাউটার কনফিগার করে দিয়েছে।

আপনার রাউটারের পাসওয়ার্ড সুরক্ষিত রাখুন এবং বারবার পরিবর্তন করুন। এই রাউটার কনফিগার করার কাজটি খুবই সহজ। চাইলে শিখে নিতে পারেন।

আপনি চাইলে আপনার বাসার প্রিন্টার, এসি, স্মার্ট টিভি, মোবাইল ফোন ইত্যাদি নানা যন্ত্রপাতিকে কানেক্ট করে নিতে পারেন।

আশা করি কম্পিউটার বেসিক নলেজ সম্পর্কে আপনার একটা ধারনা হয়ে গেছে, এর বাইরে আপনার যদি কিছু জানার থাকে অবশ্যই কমেন্ট বক্সে জানিয়ে যেতে ভুলবেন না।

Previous articleফরেক্স ট্রেডিং থেকে আয় কিভাবে করবেন? আদৌ সম্ভব?
Next articleচেক লেখার নিয়ম এবং চেক ছাড়া টাকা তোলার সকল উপায়।
যে ব্যর্থ সে অজুহাত দেখায়, যে সফল সে গল্প শোনায়। আমি অজুহাত নয় গল্প শোনাতে ভালবাসি। আসুন কিছু গল্প শুনি, নিজের গল্প অন্যকে শুনাই।