ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার

আমরা অনেক সময়ই শখের বসে মোবাইল ক্যামেরায় অনেক ভিডিও ধারন করে থাকি, এবং সেটা স্মৃতি হিসেবে সংরক্ষন করি। কিন্তু আমরা চাইলেই এই ভিডিও গুলোকে সামান্য একটু কষ্ট করে এডিটিং করে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারি। অনেকেই ভেবে নেন ভিডিও এডিটিং করা বোধ হয় খুবই কঠিন কাজ। কিন্তু আসলে মোটেই তা নয়। এজন্য আপনার তেমন কোন আলাদা জ্ঞানেরই প্রয়োজন নেই। বেশ কিছু ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার করে আপনি খুব সহজেই ভিডিও এডিটিং করে আপনার ভিডিওটি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পারেন।

আমরা অনেকেই আজকাল ইউটিউব কিংবা ফেসবুকে ভিডিও আপলোড করি। সাধারণ মানের “র” ভিডিও না দিয়ে সামান্য এডিটিং করে দিলে আপনার ভিডিওটি আরও আকর্ষণীয় হতে পারে।

আমার আজকের ব্লগে আপনাদের সাথে কিছু  ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার নিয়ে আলোচনা করব যেগুলো ভিডিও এডিটিং এর কাজে দুর্দান্ত। গুগল সার্চ করলেই ক্র্যাক ভার্সনও পেয়ে যেতে পারেন।

তাহলে আসুন শুরু করা যাক।

আর যারা না পড়ে ভিডিও দেখে জানতে আগ্রহি তারা চাইলে নিচের ভিডিও দেখে নিতে পারেন।

এডোবি প্রিমিয়ার প্রো (Adobe Premiere Pro)

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর কথা আসলে প্রথমেই বলতে হয় এডোবি প্রিমিয়ার প্রো (Adobe Premiere Pro) এর কথা। আমরা সবাই জানি এডোবি মানেই গ্রাফিক্স এর কাজ করার সফটওয়্যার। আর গ্রাফিক্সের কাজ মানেই এডোবি সেরা।

তবে, নতুন হিসেবে এডোবি প্রিমিয়ার প্রো ইন্সটল করার পর আপনি ভড়কে যেতে পারেন। এ আবার কি? কোনটার কাজ কি? কুল খুঁজে পাবেন না। আমি সিউর।

তবে, যারা এডোবির অন্যান্য সফটওয়্যারের সাথে পরিচিত তারা মেনুগুলোর সাথে পরিচিত হয়ে থাকবেন। কারণ এডোবি তার সব সফটওয়্যারে একই মেনু ব্যবহার করে থাকে।

তবে শুরুতেই ভড়কে না গিয়ে, ইউটিউব দেখে শেখার চেষ্টা করুন, আশা করি বিফলে যাবেন না। কারণ, ভিডিও এডিটিং এর কাজে এখন পর্যন্ত এডোবি প্রিমিয়ার প্রো (Adobe Premiere Pro)ই সেরা বলা যায়। ভিডিও এবং অডিও এডিটিং টুলসের এমন কিছু নেই যা এখানে পাবেন না।

ম্যাক, উইন্ডোজ কিংবা লিনাক্স ব্যবহারকারি সবাই এটি ব্যবহার করতে পারবেন।

ওয়ান্ডারশেয়ার ফিল্মোরা (Wondershare Filmora)

ভিডিও এডিটিং এর অনেক সফটওয়্যার আছে, এর মধ্যে আমার পছন্দের সফটওয়্যার হল Filmora। আমি ব্যক্তিগতভাবে নিজে এই সফটওয়্যারটি ব্যবহার করি। এটি ব্যবহার করে আপনি চাইলেই প্রোফেসনাল মানের ভাল এডিটিং করতে পারবেন।

আপনার কম্পিউটার যদি সাধারণ মানের হয়ে থাকে, মানে আমি বোঝাতে চাইছি যদি আপনার কম্পিউটারের গ্রাফিক্স কার্ড বা জিপিইউ না থাকে তাহলে আপনি এটিই ব্যবহার করবেন। সাধারণ মানের কপিউটারে ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার এর জন্য এটি সেরা।

এর সবচেয়ে আকর্ষণীয় ব্যাপার হচ্ছে এর ইউজার ফ্রেন্ডলি ইন্টারফেস যা খুবই সহজ এবং যে কেও ব্যবহার করতে পারবে। এজন্য তার তেমন কোন আলাদা জ্ঞানের প্রয়োজন পরবেনা। এই সফটওয়্যার দিয়ে নিজের শখের ভিডিওটি এডিটিং করে আরও আকর্ষণীয় করে আপনার বন্ধুদের তাক লাগিয়ে দিতে পারবেন।

অডিও-ভিডিও এডিটিং, ট্রাঞ্জিশন, টাইটেল অথবা ইফেক্টের জন্য অনেক বিল্টইন প্লাগিন আছে, শুধুমাত্র ক্লিক করেই এড করে নিতে পারবেন।

গুগল সার্চ করে খুব সহজে আপনি Filmora এর ক্র্যাক ভার্সন পেয়ে যাবেন, আমি এখানে আর সেই লিংক দিচ্ছিনা। আবার কোন সফটওয়্যারের সিডি/ডিভিডি কিনেও আপনি ক্র্যাক ভার্সন আপনার পিসিতে ইন্সটল করে নিতে পারে।

ক্র্যাক ভার্সন কিভাবে ইন্সটল করতে হয় তা আপনার Filmora যে ফোল্ডারে আছে সেখানেই কোন এক ফোল্ডারে পেয়ে যাবেন। কোন টেক্সট ফাইলে লেখা থাকতে পারে ইন্সট্রাকশন।

ম্যাক, উইন্ডোজ কিংবা লিনাক্স ব্যবহারকারি সবাই এটি ব্যবহার করতে পারবেন।

ক্যামটাসিয়া (Camtasia)

ইউটিউব ভিডিও এডিটিং নিয়ে যারা কাজ করেন বা করতে চাচ্ছেন তাদের জন্য ক্যামটাসিয়া (Camtasia) নামটি না বললেই নয়। এটির ব্যবহারও খুব সহজ। 

বিশেষ করে যারা অন স্ক্রিন টিউটোরিয়াল তৈরি করতে চান তাদের জন্য এটি একটি অবশ্য প্রয়োজনীয় ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার। মানে হল এটি ব্যবহার করে আপনি আপনার স্ক্রিন ভিডিও করে সাথে ভয়েস দিতে পারবেন, নিচে ক্যামেরা অন রেখে আপনার ফেসও রাখতে পারবেন। মাউস/কারসর হাইলাইট করতে পারবেন।এককথায় আপনি আপনার টিউটোরিয়াল তৈরির জন্য যা যা লাগবে সবই এখানে পাবেন।

এটিও খুবই ইউজার ফ্রেন্ডলি একটি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার, তারপরেও প্রোয়োজন হলে আপনি ইউটিউব টিউটোরিয়াল দেখে নিতে পারেন।

গুগল ঘেটে ক্র্যাক ভার্সন খুঁজে নিন। ফ্রি ভার্সনে এক্সপোর্ট করতে পারবেন না। ম্যাক, ইউন্ডোজ কিংবা লিনাক্স ব্যবহারকারি সবাই এটি ব্যবহার করতে পারবেন।

সনি ভেগাস (Sony Vegas)

ভিডিওতে ইফেক্ট দেবার জন্য সনি ভেগাস (Sony Vegas) এর তুলনা নেই। সচরাচর এই সফটওয়্যারটির নাম আপনি শুনবেননা।

ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার ব্যবহার বিবেচনায় সনি ভেগাসের তুলনা শুধু সনি ভেগাসই বলা যায়। এটিও একটি ইউজার ফ্রেন্ডলি সফটওয়্যার। সেন্সেশনাল ভিডিও এডিটিং এ এর জুড়ি মেলা ভার। এর রয়েছে পাওয়ারফুল ভিডিও এবং একই সাথে অডিও এডিটিং টুলস।

এটি শুধুমাত্র ইউন্ডোজ ব্যবহারকারীদের জন্য। ম্যাক কিংবা লিনাক্স ব্যবহারকারিরা এই ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার পাবেননা। ১৮ই আগস্ট ২০২১ এটার সর্বশেষ ভার্সন বাজারে এসেছে যা Vegas Pro 19।

আশা করি ভিডিও এডিটিং সফটওয়্যার নিয়ে আজকের এই ব্লগটি আপনার কাজে লেগে যাবে। আমাদের এই ব্লগের অন্যান্য লেখাগুলো পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি ভাল লাগবে।

আর হ্যা, আমাদের ইউটিউব চ্যানেলে সাবস্ক্রাইব করতে অবশ্যই ভুলবেন না। ফেসবুক পেজেও লাইক দিয়ে সংযুক্ত থাকুন।

ধন্যবাদ সবাইকে।

Previous articleVPN Router কি ও কেন ব্যবহার করবেন?
Next articleক্যান্সার কিভাবে সৃষ্টি হয় ? ক্যান্সার থেকে মুক্তির উপায় কি ?
যে ব্যর্থ সে অজুহাত দেখায়, যে সফল সে গল্প শোনায়। আমি অজুহাত নয় গল্প শোনাতে ভালবাসি। আসুন কিছু গল্প শুনি, নিজের গল্প অন্যকে শুনাই।