কিভাবে ফরেক্স ট্রেড করব ? কোন স্ট্রাটেজি ফলো করে ট্রেড করলে আমি সফল হতে পারব? যারা আপনারা নতুন ফরেক্স ট্রেডার তাদের মাঝে এই প্রশ্নটি বারবার ঘুরপাক খায়, তাই না? জানলে অবাক হবেন শতকরা ৯৫ জন ট্রেডার ফরেক্স থেকে আয় করতে পারেনা, তারা লস করে, তারমানে ফরেক্স ট্রেডে লাভ করেন মাত্র শতকরা ৫ জন।

তাই বলি, ফরেক্স ট্রেড থেকে টাকা আয় করা এতটা সহজ নয়। আবার এতটা কঠিনও নয় যতটা ভাবছেন। আজকের ব্লগে আমি আপনাদের। ২টি উইনিং স্ট্রাটেজি শিখাব। যদি ভালভাবে ফলো করতে পারেন, আপনি ঐ ৫ জনের মধ্যে একজন হতে পারবেন। গ্যারান্টেড।

ফরেক্স নিয়ে আজই যদি আপনি প্রথম জেনে থাকেন, তাহলে আরও কিছু লেখা পড়ে দেখার অনুরোধ করব। নিচে লিংক দেয়া আছে, আগে পড়ে আসুন।

কিভাবে ফরেক্স ট্রেড করব

প্রত্যেক ফরেক্স ট্রেডারের একটি স্ট্রাটেজি থাকে। আপনাকেও একটি স্ট্রাটেজি তৈরি করে নিতে হবে। আমি আপনাকে আজ একটি স্ট্রাটেজি তৈরি করতে সহায়তা করব। নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন।

একাউন্ট না থাকলে XM ব্রোকারে ট্রেড করতে পারেন। XM আমার দৃষ্টিতে সেরা ব্রোকার। একাউন্ট করতে এখানে ক্লিক করুন।

১০০% ডিপোজিট বোনাস

মনে রাখবেন আমার এই স্ট্রাটেজি আপনার জন্য যদি আপনার ১০০০ ডলার ব্যালেন্স থাকে। এর চেয়ে কম ব্যালেন্স নিয়ে এই স্ট্রাটেজি ফলো করতে যাবেন না। কথা দিচ্ছি, তিন মাসে আপনার একাউন্ট সাইজ ডাবল হয়ে যাবে।

তাছাড়া, কেও এই স্ট্র্যাটেজি ফলো করে তার একাউন্ট উড়ে গেলে তার জন্য আমাকে দায়ি করা যাবেনা। যদি মানেন তাহলে সামনের দিকে এগিয়ে যান।

লট নির্ধারণ করে নিন

প্রথমেই আপনাকে বলে রাখি, এই পদ্ধতিতে ট্রেড করতে হলে আপনার অবশ্যই ১০০০ ডলার ব্যালেন্স থাকতে হবে এবং আপনার প্রতিটি এন্ট্রি লট অবশ্যই আমার নির্ধারিত লটে হতে হবে। অর্থাৎ ০.০১ লটে প্রতি এন্ট্রি নিতে হবে।

কোন এন্ট্রি এর চেয়ে বড় হতে পারবেনা।

সবার আগে ট্রেন্ড দেখুন

প্রথমে আপনাকে মার্কেটের ট্রেন্ড বুঝতে হবে। মার্কেট আপট্রেন্ডে আছে নাকি ডাউনট্রেন্ডে আছে সেটা দেখতে হবে। কিভাবে বুঝবেন?

বড় টাইমফ্রেমে দেখুন। প্রথমে মান্থলি ক্যান্ডেল প্যাটার্ন দেখুন, তারপর উইকলি, তারপর ডেইলি ও চার ঘন্টার ক্যান্ডেল প্যাটার্ন দেখুন।

এখান থেকে আপনি ডিসিশন নিন, মার্কেট কোন ট্রেন্ডে আছে। যদি মার্কেট আপট্রেন্ডে থাকে তাহলে বাই দেয়ার জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুতি নিন আর যদি মার্কেট ডাউনট্রেন্ডে থাকে তাহলে সেল দেবার প্রস্তুতি নিতে পারেন। তবে তা এখনই নয়।

মনে রাখবেন, ট্রেন্ড বের করার জন্য ডেইলি টাইম ফ্রেম দেখবেন। কিন্তু এন্ট্রি দেবার জন্য চার ঘণ্টার টাইম ফ্রেম দেখে এন্ট্রি নিবেন।

সবসময় ট্রেন্ডের পক্ষে থাকবেন, কখনই ট্রেন্ডের বিপক্ষে যাবেন না। 

মনে রাখবেন, ট্রেন্ড ইজ ইউর ফ্রেন্ড আনটিল  ইট বেন্ড।

 

সাপোর্ট-রেজিস্টেন্স দেখুন

আপনি এই লেখা পড়ছেন মানে আমি ধরে নিচ্ছি সাপোর্ট, রেজিস্টেন্স নিয়ে আপনার ধারণা অলরেডি আছে। লাস্ট ৬ মাসের ক্যান্ডেল চেক করে দেখুন। সাপোর্ট-রেজিস্টেন্সগুলো চিহ্নিত করুন। প্রয়োজনে লাইন টেনে রাখুন।

আগের ধাপে ট্রেন্ড বের করার সময় যদি আপট্রেন্ড পেয়ে থাকেন তাহলে সাপোর্টে বাই দেবেন আর যদি ডাউন ট্রেন্ড পেয়ে থাকেন তবে রেজিস্ট্রেন্সে সেল দেবেন। এটাই ব্যাসিক রুল। তারপরেও অপেক্ষা করুন। আরও অনেকগুলো ফ্যাক্টর চেক করে ডিসিশন নিন।

আর হ্যা কারেন্ট মার্কেট প্রাইস যতক্ষন আপনার চিহ্নিত পয়েন্ট বা এন্ট্রি প্রাইসে না আসে ততক্ষণ অপেক্ষা করুন। তাড়াহুড়ো করবেন না একদম। মনে রাখবেন, মার্কেট পালিয়ে যাচ্ছে না।

আপনার কাংক্ষিত এন্ট্রি প্রাইসে না এসে আগেই বাউন্স করলে আবার নতুন করে সাপোর্ট রেজিস্টেন্স বের করুন নতুন এন্ট্রি প্রাইস ফিক্সড করে অপেক্ষা করুন।

উইনিং স্ট্রাটেজি ০১- ট্রেন্ডের পক্ষে ট্রেড

প্রথম ধাপঃ এন্ট্রি নিন

আপনার কাংক্ষিত এন্ট্রি পয়েন্টে পেলেই ০.০১ লট এন্ট্রি নিয়ে নিন। এবারে মার্কেট আপনার বিপক্ষে যেতে থাকলে প্রতি ৫০ পিপ পর পর ০.০১ করে এন্ট্রি নিতে থাকুন।

 

এভাবে ০.০১ করে এন্ট্রি নিতে নিতে একটি প্যাকেজ তৈরি করুন। মার্কেট আপনার এগেইন্সটে যত যাবে তত আপনার লাভের সম্ভাবনা বাড়তে থাকবে।

আপনি যেহেতু ট্রেন্ডের পক্ষে আছেন তাই কখনই প্যানিক হবেন না। আপনি আজ হোক কাল হোক প্রফিট করবেনই। অহেতুক ভয় পেয়ে ট্রেড ক্লোজ করে দিবেন না কিংবা বড় লটে এন্ট্রি দিবেন না।

মনে রাখবেন, বেশিরভাগ ট্রেডার লস করে অধৈর্য  হয়ে বড় বড় লটে মানি ম্যানেজমেন্ট ফলো না করে ট্রেড করার জন্য। আপনি মাথা ঠাণ্ডা রাখুন।

দ্বিতীয় ধাপঃ এক্সিট পয়েন্ট বের করে নিন

মনে রাখবেন, সঠিক এন্ট্রি নেয়া খুব সহজ কিন্তু সঠিক এক্সিট পয়েন্ট বের করা এতটা সহজ নয়। তাই এক্সিট পয়েন্ট বের করার ক্ষেত্রে খুব সাবধান হবেন। এক্সিট পয়েন্ট বের করার জন্য আপনি ফিবোনাক্কি টুলটি ব্যাবহার করতে পারেন।

আপনি যেহেতু ট্রেন্ডের পক্ষে আছেন, তাই আপনার জন্য সুবিধা হল আপনি প্যাকেজ হোল্ড করে রাখতে পারেন। তবে স্ট্রং সাপোর্ট-রেজিস্টেন্স দেখে ট্রেড ক্লোজ করে দিয়ে প্রফিট রিয়েলাইজ করাটাই বুদ্ধিমানের কাজ।

এভাবেই ট্রেড করতে থাকুন। ইনশাল্লাহ সফল হবেন।

তবে, ১০০০ ডলার ব্যালেন্সে কখনই একই সাথে ২টা কারেন্সির ট্রেড করতে যাবেন না। মার্কেট অনেক ভোলাটাইল, যে কোন সময় আপনার এগেইন্সটে ৪০০-৫০০ পিপ মুভ করতে পারে। তাই একটা কারেন্সি নিয়ে থাকুন। একের বেশি কারেন্সিতে একই সাথে এই ট্রেড স্ট্রাটেজি ফলো করতে গেলে আপনার একাউন্ট হুমকির মুখে পরে যেতে পারে।

উইনিং স্ট্রাটেজি ০২- ট্রেন্ডের বিপক্ষে ট্রেড

ট্রেন্ডের পক্ষে ট্রেড করায় রিস্ক যেমন কম, ট্রেন্ডের বিপক্ষে ট্রেড করাতে রিস্ক তেমনি অনেক বেশি। তারপরেও আমি আপনাদের এমন এক স্ট্র্যাটেজি শিখাব যেখানে আপনি ভাল প্রফিট করতে পারবেন।

কারেন্সি খুঁজে বের করুন

ফরেক্স মার্কেটে অনেক কারেন্সি আছে, এমন একটি পেয়ার খুঁজে বের করুন যেই পেয়ারটি টানা ৫-১০ দিন প্রতিদিন বেড়েছে বা কমেছে। ডেইলি ক্যান্ডেল দেখুন।

এবার ওই পেয়ারের আর এস আই দেখুন কত।

যদি টানা ৫-১০ দিন বেড়ে থাকে তাহলে অবশ্যই আর এস আই ৭৫-৯০ এর মাঝে পাবেন। আর যদি ৫-১০ দিন কমে থাকে তাহলে অবশ্যই ২৫-৩৫ এর মাঝে পাবেন ডেইলি আর এস আই।

এন্ট্রি নিন চোখ বেধে

এবার চোখ বেধে বাই বা সেল এন্ট্রি নিন। যদি টানা বেড়ে থাকে ৫/১০ দিন তাহলে সেল দিন, আর যদি টানা পরে থাকে ৫/১০ দিন তাহলে বাই দিন।

কিন্তু লট কিন্তু ০.০১ লট। বেশি দেয়া যাবে না। এবার মার্কেট যতই আপনার বিপক্ষে যেতে থাকবে, প্রতি ৫০ পিপ পর পর ০.০১ লটে এন্ট্রি নিতে থাকুন।

ভয় পাবেন না। লট বাড়াবেন না। কখনই ভাববেন না-

মার্কেট অনেক পড়ছে আর পড়বেনা কিংবা মার্কেট অনেক বাড়ছে আর বাড়বেনা, বড় লট মেরে দেই।

এই কাজ করেছেন ত মরেছেন। আপনার বাঁচার উপায় আর নাই। মনে রাখবেন, মার্কেট কখনই আপনার পক্ষে থাকবেনা। সবসময় আপনি যা ভাবছেন তার বিপরীতটাই হবে। তাই রিস্ক নিয়ে বড় লটে ট্রেড করবেন না।

এক্সিট করুন সময় বুঝে

আপনি যেহেতু ট্রেন্ডের বিপক্ষে আছেন, তাই খুব সাবধান। লম্বা সময় ধরে রাখার চিন্তা বাদ দিন। ৩%-৫% প্রফিট হলেই আপনি সব ট্রেড ক্লোজ করে হাত মুখ ধুয়ে নিন।

কখনই লোভ করবেন না। অযথা ঝুঁকি নিবেন না। সফলতা আসবেই।

আর হ্যা, আগের মতই বলতে চাই একই সাথে কখনই একের বেশি কারেন্সিতে এন্ট্রি নিবেন না। যখনই কোন কারেন্সিতে এন্ট্রি নিবেন অন্য কোন কারেন্সিতে হাজার অপরচুনিটি এলেও সেই কারেন্সিতে ট্রেড নেয়া যাবেনা।

পরিশেষে

পরিশেষে বলতে চাই, ফরেক্স মার্কেটে লাভ করার চেয়ে লস করা সহজ। মাথা ঠান্ডা রাখুন, আপনার সারা মাসের ইনকাম একদিনের একটি ছোট্ট ভুলে শেষ হয়ে যেতে পারে।

কক্ষনই, মাথা গরম করা চলবেনা। যদি মাথা বেশি গরম হয়ে যায়, নিজেকে কন্ট্রোল করতে না পারেন – ট্রেড থেকে ছুটি নিয়ে নিন। এক সপ্তাহ মার্কেট দেখবেন না। মার্কেটের ধারে কাছেও আসবেন না।

আরেকটি কথা মনে রাখবেন, ভাল ব্রোকারে ট্রেড করবেন সবসময়। রেগুলেটেড ব্রোকার খুঁজে বের করুন। অনলাইনে অনেক ব্রোকার পাবেন, এদের মাঝে XMই সেরা।

আর হ্যা, মনে রাখবেন, বাংলাদেশে ফরেক্স ট্রেড করা আইনত নিষিদ্ধ। আমার এই ব্লগ পড়ে আপনি যদি উৎসাহিত হন, ট্রেড শুরু করেন- সেই দায়িত্ব আপনার। আমাকে কোন ভাবেই দায়ি করা যাবেনা।

তবে, দেশের বাইরে যে কেও ট্রেড করতে পারেন। বেশিরভাগ দেশেই ফরেক্স ট্রেড করতে আইনত কোন বাধা নাই। 

Previous articleসার্চ ইঞ্জিন কিভাবে কাজ করে ?
Next articleচা পাতায় কোন ভিটামিন থাকে – দু’টি পাতা ও একটি কুঁড়ির গল্প
যে ব্যর্থ সে অজুহাত দেখায়, যে সফল সে গল্প শোনায়। আমি অজুহাত নয় গল্প শোনাতে ভালবাসি। আসুন কিছু গল্প শুনি, নিজের গল্প অন্যকে শুনাই।