ওয়েবসাইট খোলার নিয়ম কি?

ডিজিটাল যুগের ডিজিটাল ঠিকানা হল ওয়েবসাইট। আপনার একটা ওয়েবসাইট থাকা মানে হল আপনার একটা ঠিকানা থাকা। ওয়েবসাইট খোলার নিয়ম জানা থাকলে আপনার এই ডিজিটাল ঠিকানা আপনি নিজেই তৈরি করে নিতে পারবেন। বর্তমান এই টেকনোলজির যুগের সাথে খাপ খাইয়ে চলার জন্য আমার তো মনে হয় সবারই একটি ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থাকা দরকার যেখানে সে তার নিজের প্রোফাইল তৈরি করে রাখবে। আজকের এই ব্লগে আমি আপনারা যারা ওয়েবসাইট খোলার নিয়ম নিয়ে সবকিছু একসাথে জানতে চান তাদের জন্য সহজভাবে সবকিছু তুলে ধরব। আশা করি আপনাদের ভাল লাগবে এবং কাজেও লাগবে।

ওয়েবসাইট কাকে বলে?

এক বা একাধিক  ওয়েবপেইজ নিয়ে গঠিত একটি ডিজিটাল ঠিকানা যা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যেকোন স্থান থেকে ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে এক্সেস করা যায় তাকেই ওয়েবসাইট বলে। একটি ওয়েবসাইটের সকল তথ্য মূলত একটি সার্ভারে থাকে এবং একটি ডোমেইন নাম দিয়ে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ঐ ওয়েবসাইটে আমরা প্রবেশ করতে পারি।

ওয়েবপেইজ হল একটি স্ক্রীনে প্রদর্শন যোগ্য একটি পাতা যেখানে ছবি, ভিডিও, টেক্সট, ইত্যাদি নানা প্রকারের ডিজিটাল কনটেন্ট রাখা হয়। কোন ওয়েবসাইটে প্রবেশ করলে আমরা প্রথমে যে পেজ বা পাতাটি দেখতে পাই তাকে হোম পেইজ বলা হয়। আর ওয়েব ব্রাউজার হল যা দিয়ে ওয়েবসাইট ব্রাউজ করা হয়। যেমন- গুগল ক্রোম, অপেরা, মাইক্রোসট এজ ইত্যাদি।

মনে রাখুন
তাহলে এখানে আপনি দুইটি জিনিস পেলেন। একটি হল ডোমাইন নেম, আরেকটি হল সার্ভার। শব্দ দুইটি মনে রাখেন। ওয়েবসাইট খোলার নিয়ম  জানতে হলে এই দুইটি শব্দ আপনাকে মনে রাখতে হবে।

উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, আমাদের এই রেডিটুরিডিং.কম (www.ready2reading.com) ওয়েবসাইটির কথা। এখানে  www মানে হল World Wide Web, প্রতিটি ওয়েবসাইটের আগে এটি থাকে। ready2reading হল ওয়েবসাইটের ডোমেইন নাম এবং com হল এক্সটেনশন। ডোমেইন নামের আগে এবং পরে ডট (.) থাকে। একই এক্সটেনশনে প্রতিটি ডোমেইন নাম ইউনিক হয়ে থাকে। মানে হল, ডট কম এক্সটেনশনে ready2reading শুধুমাত্র একটি ডোমেইন থাকতে পারবে। ডট নেট বা ডট অন্য কোন এক্সটেনশনে ready2reading ডোমেইন নাম থাকতে পারে।

ডোমেইন নামটির আড়ালে আসলে একটি আইপি এড্রেস থাকে যা ডোমেইন নাম দিয়ে মাস্কিং করা থাকে। আই পি এড্রেস হচ্ছে করেকটি সংখ্যার সমষ্টি যা মনে রাখা সম্ভব নয় তাই একে অক্ষর দিয়ে মাস্কিং করা থাকে।

ওয়েবসাইট কত প্রকার?

সারা পৃথিবী জুড়ে কোটি কোটি ওয়েবসাইট আছে এবং প্রতিদিন আরও  লাখ লাখ নতুন ওয়েবসাইট এর সাথে যুক্ত হচ্ছে। সেপটেম্বর ১২, ২০২২ তারিখ পর্যন্ত একটি হিসাব হল মোট চালু ওয়েবসাইটের সংখ্যা ১.৯৮ বিলিয়ন। প্রতিদিন গড়ে ২৫২,০০০ নতুন ওয়েবসাইট এর সাথে যুক্ত হচ্ছে। যদিও গঠনগত দিক থেকে চিন্তা করলে ওয়েবসাইট মূলত দুই ধরনের। (১) স্ট্যাটিক ওয়েবসাইট এবং (২) ডাইনামিক ওয়েবসাইট।  তবে আমরা আজকে আলোচনা করব ওয়েবসাইটে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে ওয়েবসাইটের প্রকারভেদ নিয়ে।

ওয়েবসাইটে থাকা তথ্যের ভিত্তিতে ওয়েবসাইট অনেক প্রকারের হতে পারে। নিচে প্রধান প্রধান কয়েকটি প্রকার নিয়ে অল্প আলোচনা করা হল।

ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট

ব্যাক্তিগত ওয়েবসাইট হল এমন একটি ওয়েবসাইট যেটা আসলে কোন ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে তৈরি করা হয়। যেখানে নির্দিষ্ট কোন ব্যক্তির প্রোফাইল, ছবি, বিভিন্ন এক্টিভিটিজ, পছন্দ-অপছন্দ, মতামত ইত্যাদি তুলে ধরা হয়ে থাকে। যেকোন সাধারণ মানুষের যেমন ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থাকতে পারে তেমনি একজন প্রফেশনাল মানুষেরও ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট থাকতে পারে। আবার ঠিক তেমনি একজন রাজনৈতিক ব্যক্তিরও ওয়েবসাইট হতে পারে।

সামাজিক ওয়েবসাইট

যে সব ওয়েবসাইটে সমাজের বিভিন শ্রেনীর মানুষ একাউন্ট তৈরি করে নিজস্ব প্রোফাইল তৈরি করে একে অপরের সাথে যোগাযোগ রক্ষা করতে পারে তাকে সামাজিক ওয়েবসাইট বলে। যেমনঃ ফেসবুক, টুইটার ইত্যাদি।

ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট

যেসকল ওয়েবসাইট কোন ব্যবসা-প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রিক হয়ে থাকে, যেখানে ঐ প্রতিষ্ঠানের বর্ণনা, তাদের এক্টিভিটিজ, অভিজ্ঞতা ইত্যাদি প্রকাশ করা হয় তাকে ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট বলে। একটি সুন্দর এবং কার্যকরী ব্যবসায়িক ওয়েবসাইট আপনার ব্যবসার প্রচারে বিশাল ভূমিকা রাখতে পারে।

ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট

যেসব ওয়েবসাইটে ভিডিও আপলোড এবং শেয়ার করা যায় তাকে ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট বলা হয়। বর্তমান সময়ের সবচেয়ে জনপ্রিয় ভিডিও শেয়ারিং ওয়েবসাইট হল ইউটিউব। এখানে চ্যানেল খুলে ভিডিও আপলোড করে অনেক মানুষ জিবীকাও নির্বাহ করছে।

ব্লগিং ওয়েবসাইট

যেসব ওয়েবসাইটে বিভিন্ন লেখকের লেখা প্রকাশ করার সুবিধা থাকে তাকে ব্লগিং ওয়েবসাইট বলে। আমাদের এই ব্লগ রেডিটুরিডিং.কমকে আপনি ব্লগিং ওয়েবসাইট বলতে পারেন।

ই-কমার্স ওয়েবসাইট

যে সকল ওয়েবসাইটে পণ্য কেনা-বেচার সুযোগ থাকে তাকে ই-কমার্স ওয়েবসাইট বলা হয়। যেমন বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় ই-কমার্স ওয়েবসাইট হল এমাজন

প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইট

কিছু কিছু ওয়েবসাইট আছে যেখানে মানুষ তার প্রশ্ন করলে অন্যকেও উত্তর জানা থাকলে এখানে উত্তর দিয়ে থাকে। এ ধরনের ওয়েবসাইটকে বলা হয়  প্রশ্ন-উত্তর ওয়েবসাইট। যেমনঃ কোরা একটি খুব জনপ্রিয় প্রশ্ন-উত্তরের ওয়েবসাইট।

খবরের ওয়েবসাইট

যেসব ওয়েবসাইটে প্রতিদিনের খবরাখবর প্রকাশ করা হয় তাকে, নিউজ পেপারের ওয়েবসাইট বা খবরের ওয়েবসাইট বলা হয়। যেমন প্রথমআলো.কম।

ওয়েবসাইট তৈরি করার নিয়মঃ

ওয়েবসাইট তৈরি করা খুব একটা কঠিন কিছুই নয়। তবে একটা সময় ছিল যখন ওয়েবসাইট তৈরি করতে বেশ প্রোগ্রামিং জানা দরকার হত। আর এখনকার দিনে আপনি যদি মোটামুটি মানের একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে চান তার জন্য আপনার খুব বেশি জ্ঞানের প্রয়োজন নেই। কারণ এখাওঙ্কার সময়ের বেশিরভাগ ওয়েবসাইট তৈরি করা হয় ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে।

ওয়ার্ডপ্রেস কি?

ওয়ার্ডপ্রেস একটি কনটেন্ট ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (CMS) যা ব্যবহার করে একজন ব্যবহারকারি কোন রকম প্রোগ্রামিং ল্যাংগুয়েজ না জেনেই তার ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন। এটি একটি ওপেন সোর্স এ্যাপ্লিকেশন যা পি এইচ পি (PHP) দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। আপনার জন্য এর চেয়ে আর বেশি কিছু জানার প্রয়োজন নেই।

ওয়ার্ডপ্রেস কেন এত জনপ্রিয়?

ওয়ার্ডপ্রেস এতটাই জনপ্রিয় যে বর্তমান সময়ের ৪০% ওয়েবসাইট ওয়ার্ডপ্রেস দিয়ে তৈরি করা। এই জনপ্রিয়তার মূল কারণ হচ্ছে এটি ফ্রি। এটি শুধুই ফ্রি তাই নয় এর সাথে যেসব থীম বা প্লাগ ইন রয়েছে তাও ফ্রি। হ্যা, এটা ঠিক আপনি পেইড থীম বা প্লাগ ইনস এ আরও বেশি ফিচার পাবেন, কিন্তু ফ্রি যেসব ফিচার পাবেন তাতেই আপনার চলে যাবে।

ওয়েবসাইট তৈরির ধাপগুলো কি কি

আপনি যখন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছেন যে, আপনি একটি ওয়েবসাইট বানাবেন তখন আপনাকে কয়েক ধাপে আগাতে হবে। আমি আপনাদের সুবিধার জন্য ধাপগুলো একের পর এক বলে যাচ্ছি। নির্দ্বিধায় অনুসরণ করবেন, আশা করি।

যুতসই নিস নির্বাচন করুন

আপনার প্রথম কাজ হল আপনার ওয়েবসাইটের নিস নির্বাচন করা। নিস মানে হল বিষয়বস্তু। আপনি আপনার ওয়েবসাইতের বিষয়বস্তু নির্বাচন করুন সবার আগে। নিস নির্বাচনের আগে সময় নিয়ে ভাবুন।

ভেবে এমন একটি নিস নির্বাচন কররুন যে ব্যাপারে আপনার খুব ভাল ইন্টারেস্ট আছে। যেটা নিয়ে কাজ করতে আপনি কখনও ক্লান্তি বোধ করবেন না। দিনের পর দিন আপনি আপনি পরিশ্রম করতে পারবেন।

যত কাজ করবেন আপনার ততই ভাল লাগবে, এমন একটা বিসয়বস্তু আপনি ভেবে বের করুন। কেননা, আপনাকে বেশ কিছুদিন বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করতে হবে। বিষয়বস্তু বা নিস যদি আপনার ভাল লাগার বিষয় না হয় তাহলে কিছুদিন কাজ করে আপনি ক্লান্ত হয়ে কাজ ছেড়ে দিবেন।

গুগলে সার্চ করে দেখুন কোন নিসগুলোতে সফলতার হার কেমন। এবারে একটা সিদ্ধান্ত নিয়েই ফেলুন।

ডোমেইন নাম ঠিক করে ফেলুন

নিস অনুযায়ী একটি নাম ঠিক করে ফেলুন, যা শুনতে শ্রুতিমধুর কিন্তু সর্বচ্চো দুই শব্দের। আবার তা যেন আপনার নিসের সাথে মানান সই হয়। কোথায় থেকে ডোমেইন নিবেন?

ডোমেইন নেবার আগে কি কি ভেবে সিদ্ধান্ত নিবেন? জেনে নিন এখান থেকে।

কোন চিন্তা ছাড়াই এক্সনহোষ্ট থেকে ডোমেইন কিনে ফেলুন। এক বছরের জন্য হয়তবা হাজারখানেক টাকা লাগবে। বিকাশ কিংবা ক্রেডিট কার্ড  বা যেকোন ভিসা কার্ড ব্যবহার করে পেমেন্ট করার সুবিধা থাকছে।

এবার হোষ্টিং করার পালা

ডোমেইন যেখান নেন না কেন হোষ্টিং নেবার সময় আপনাকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। যদিও আপনি চাইলে যেকোন সময় হোষ্টিং চেঞ্জ করে ফেলতে পারেন। তবে, প্রথমেই সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারলে ভাল।

আপনার ট্রাফিকের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে আপনাকে হোষ্টিং প্যাকেজ নির্বাচন করতে হবে। প্রথম দিকে যেহেতু আপনার ট্রাফিক বা ভিজিটির থাকবে কম তাই কম টাকার প্যাকেজ আপনার জন্য যথেষ্ট হবে, প্রথম বছর তাই মোটামুটি মানের হোষ্টিং নিলেই চলে।

তারপর আপনি চাইলে, ভাল প্যাকেজ নিতে পারেন আপনার ট্রাফিকের উপর ভিত্তি করে। প্রথম বছরের জন্য আপনি বছরে ২ থেকে ৩ হাজার টাকার মধ্যে পাওয়া যায় এমন প্যাকেজ নিন। পরের বছর ৬-৭ হাজার টাকার একটা ভাল প্যাকেজ নিতে পারেন।

মনে রাখবেন, হোষ্টিং প্যাকেজের উপর আপনার সাইটের স্পীড সহ আরও কয়েকটি ইম্পরট্যান্ট বিষয় নির্ভর করবে। ধীরে ধীরে নিজেই সব জানতে পারবেন।

ডোমেইন আর হোষ্টিং ভিন্ন কম্পানি থেকে নিলেও সমস্যা নাই। দুইটি লিংক করে দেয়া যায়। হোষ্টিং এর সি প্যানেলে গিয়ে সেখানে ডোমেইন এ্যাড করে নিবেন অ্যাড অন ডোমেইন থেকে আর ডোমেইন যেখান থেকে নিয়েছেন ওখানে গিয়ে নেম সার্ভার চেঞ্জ করে দিবেন। তাহলেই দুইটি লিংক হয়ে গেল

ডোমেইন আর হোস্টিং তও হল, এবার ওয়েবসাইট তৈরি করার পালা।

ওয়ার্ডপ্রেস ইনস্টল করুন

আগেই আমি আপনাদের ওয়ার্ডপ্রেস নিয়ে ধারনা দিয়ে রেখেছি, এবার সেই ওয়ার্ডপ্রেস এর কাজ করার পালা। প্রথমে আপনার সি প্যানেলে ঢুকে যান। সি প্যানেলের একদম নিচে সফটাকুলাস অংশে দেখবেন ওয়ার্ডপ্রেস দেখতে পাবেন। ইন্সটল করে ফেলুন।

এডমিন প্যানেল

ইন্সটল করার সময়, আপনার ডোমেইন নেম দেখিয়ে দিন। এডমিন প্যানেলের আইডি আর পাসওয়ার্ড দিন। এবার আপনার এডমিন প্যানেলে প্রবেশ করুন। ওয়ার্ডপ্রেসের এ্যাডমিন প্যানেলে ঢুকলে উপরের মত দেখতে পাবেন।

আপনার ওয়েবসাইট তৈরির কাজ শুরু হয়ে গেল।

ওয়ার্ডপ্রেসের বেসিক কাজগুলো

বেসিক কাজগুলো সেরে ফেলুন। বেসিক যে কাজগুলো আপনাকে করতে হবে তার ডিটেইল না দিয়ে আমি শুধু কাজের ধাপগুলো বলে যাচ্ছি। সব ডিটেইল বলতে গেলে এই কনটেন্ট আর শেষ হবেনা। আপনি স্টেপগুলো জেনে নিয়ে ইউটিউব বা গুগল করে ডিটেইল জেনে নিন। আর একটু যদি নিজেই গুতাগুতি করেন নিজে নিজেই সব শিখে যাবেন।

  • প্রথম কাজ হল আপনাকে একটি যুতসই থীম বাছাই করে ইনস্টল করতে হবে। ওয়ার্ডপ্রেসে থীম আপশনে আপনি এটি পেয়ে যাবেন। ইনস্টল করে এক্টিভেট করে নিন একটি ফ্রি থীম।
  • প্রয়োজনীয় কিছু প্লাগ ইন আপনাকে ইনস্টল করে নিতে হবে। যেমন ধরুন AMP, WP Rocket, Yoast, google site kit ইত্যাদি।
  • ওয়েবসাইটের মেনু, হেডার, ফুটার, লোগো, হোমপেইজ ইত্যাদি একটু সাজিয়ে নিন।
  • ওয়েবসাইটের প্রাইভেসি পলেসি, কন্টাক্ট আস, এবাউট আস, ইত্যাদি কমন পেইজ গুলো লিখে ফেলুন এবং মেনুতে জুড়ে দিন।
  • গুগল সার্চ কনসোলে আপনার সাইট ম্যাপ সাবমিট করুন, নইলে গুগল সার্চে আপনার ওয়েবসাইট আসবেনা।
  • গুগল এনালাইটিকে আপনার ওয়েবসাইট প্রপার্টি যোগ করে নিন। এখান থেকে আপনার সাইটের ট্রাফিক দেখতে পাবেন।
  • Google Site kit প্লাসইন ইন্সটল করে নিলে উপরের দুইটি কাজ সহজ হবে।

এবার লেখালেখির পালা

উপরের কাজগুলো করতে করতে আপনার কয়েকদিন পার হয়ে যাবে, বিশেষ করে সাইট গোছাতে। এরপরেই আপনার যে কাজটি মেইন কাজ সেদিকে নজর দিতে হবে। বুঝতেই পারছেন আসল কাজ বলতে আমি আপনার সাইটের কনটেন্ট লেখাকেই বুঝাচ্ছি। সাধারণ লেখালেখির সাথে কনটেন্ট লেখার কিছু পার্থক্য রয়েছে। কনটেন্ট লেখার কিছু বেসিক নিয়ম কানুন আছে। সেদিকে খেয়াল রেখে আপনাকে লিখতে হবে। মানে আপনাকে এসইও ফ্রেন্ডলি লেখা লিখতে হবে। এখন আবার বলতে পারেন, এসইও আবার কি জিনিস।

এসইও কি?

সোজা বাংলায় বলি তাহলে আপনার জন্য বুঝতে সুবিধা হবে। আমরা কিছু ইন্টারনেটে সার্চ দিতে গেলে কিছু কি ওয়ার্ড লিখে সার্চ দেই তাইনা? তারপর গুগল আমাদের কিছু রেজাল্ট দেখায় যা ১,২,৩, এভাবে সিরিয়াল অনুযায়ী থাকে। আপনিও নিশ্চই চাইবেন আপনার লেখা এভাবে গুগল সার্চে আসুক, আপনার লেখা কনটেন্টটিকে যে প্রক্রিয়ার মাধ্যমে গুগল সার্চের প্রথম দিকে আনবেন তাই হল এসইও বা সার্চ ইঞ্জিন অপ্টিমাইজেশন।

ডিটেইল এখানে আর লিখছি না, তবে আমার কিছু লেখা আছে এই ব্লগে আপনি চাইলে নিচের লিংক গুলোতে গিয়ে পড়ে আসতে পারেন।

উপরের লেখাগুলো একনজর পরে আসতেই হবে, আপনাকে যদি আসলেই শিখতে চান।

নিয়মিত লেখা চালিয়ে যান

প্রতি সপ্তাহে নিয়ম করে লেখা চালিয়ে যান। অন্ততঃ প্রতি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪টি পোষ্ট পাবলিস করতে থাকুন। এভাবে তিনমাস হয়ে গেলে আপনি কিছু ট্রাফিক পেতে শুরু করবেন। তিনমাস পর আপনি যা করবেন তা হল গুগল এ্যাড সেন্সে এপ্লাই করে ফেলুন আপনার সাইট নিয়ে। দেখবেন কয়েকদিনের মাঝেই এপ্রুভ হয়ে যাবে। এবার আপনার সাইটে গুগলের বিজ্ঞাপন প্রচার শুরু করে দিন। আপনার ইনকামও শুরু হয়ে গেল বলা যায়।

এছাড়াও আপনি যদি এফিলিয়েশন নিয়ে ভাবেন, তাও শুরু করে দিতে পারেন। এফিলিয়েশন আবার কি জিনিষ?

এফিলিয়েশন হল এক কথায় বড় বড় ই-কমার্স সাইটের প্রোডাক্ট আপনার ওয়েবসাইটের মাধ্যমে বিক্রি করা। এতে আপনি তাদের নির্ধারিত কমিশন পাবেন।

একটি ওয়েবসাইটে যদি পর্যাপ্ত পরিমান ট্রাফিক থাকে তাহলে আপনি নানা ভাবে টাকা আয় করতে পারবেন।

আরও পড়ুনঃ  ওয়েবসাইট থেকে আয় করার নানা উপায়।

ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন কিভাবে?

ডোমেইন, হোষ্টিং সব বিনামূল্যে চাইলেও আপনি পেতে পারেন। তবে, আপনি কোন স্বকিয়তা পাবেন না। তাদের ফান্ডিং এর সমস্যা তারা চাইলে ফ্রি ওয়েবসাইট তৈরি করে প্র্যাকটিস করতে পারেন। আপনি চাইলে আপনার ফ্রি ওয়েবসাইটে এ্যাড সেন্স এবং এফিলিয়েশনও করতে পারেন। তবে আমি তা কখনই সাপোর্ট করিনা। তাই এই নিয়ে আর বেশি কিছু বলছিনা।

তারপরেও যদি আপনি ফ্রি ডোমেইন আর হোষ্টিং পেতে চান তাহলে অবশ্যই এখান থেকে ঘুরে আসতে পারেন। blogger.com, wordpress.com, weebly.com, wix,com, site123.com ইত্যাদি। তবে, মনে রাখবেন এসব ডোমেইন নিয়ে গুগল সার্চে র‍্যাংক করা মোটেই সহজ বিষয় নয়।

সবশেষে,

আজকের ব্লগে ওয়েবসাইট খোলার নিয়ম লিখতে বসে মোটামুটি আপনাকে একটি ধারনা দিয়ে দিলাম প্রায় সব কিছুর। বেসিক ধারনা দেয়াই আমার মূল উদ্দ্যেশ্য ছিল। বেসিক যদি আপনি বুঝতে পারেন, বাকিটা আপনি এম্নিতেই পেরে যাবেন একটু চোখ কান খোলা রাখতে পারলে।

আশা করি আমাদের আজকের লেখাটি আপনাকে একটি  ওয়েবসাইট খোলার ব্যাপারে উৎসাহিত করবে। ধন্যবাদ সবাইকে।

Previous articleBangla keyword research কিভাবে করবেন?
Next articleক্যাপচা কোড কি এবং কেন এটি ব্যবহার করা হয়।
যে ব্যর্থ সে অজুহাত দেখায়, যে সফল সে গল্প শোনায়। আমি অজুহাত নয় গল্প শোনাতে ভালবাসি। আসুন কিছু গল্প শুনি, নিজের গল্প অন্যকে শুনাই।