এই গরমে নিশ্চই আপনি এসি কেনার কথা ভাবছেন। কিন্তু এসির বিদ্যুৎ বিল হিসাব করে আবার পিছিয়ে যাচ্ছেন। এসির বিদ্যুৎ বিল নিয়ে আপনার মনে নানা প্রশ্ন উঁকি দিচ্ছে। আজকের ভিডিও থেকে আপনি জানতে পারবেন আপনার রুমের জন্য কত টনের এসি দরকার, এসির দাম কেমন, এসির বিদ্যুৎ বিল কেমন আসে, কিভাবে এসি চালালে আপনার বিদ্যুৎ বিল সবচেয়ে কম আসবে ইত্যাদি নানা বিষয়।

ফরেক্স ট্রেড করে টাকা আয় করতে চাইলে আজই একাউন্ট খুলুন এখানে ক্লিক করে।



আপনার রুমের জন্য কত টনের এসি প্রয়োজন

জেনে রাখুন, যদিও আমরা এসির ক্যাপাসিটি বলতে টন বুঝে থাকি এসির ক্যাপাসিটি কিন্তু টনে মাপা হয়না, মাপা হয় BTU (বিটিইউ) তে।

  • ১ টন = ১২,০০০ BTU
  • ১.৫ টন = ১৮,০০০ BTU
  • ২ টন = ২৪,০০০ BTU

এসির ক্যাপাসিটি ১২০০০ BTU মানে হচ্ছে এসিটি কোন নির্দিষ্ট রুম থেকে প্রতি ঘন্টায় ১২০০০ BTU সমপরিমান তাপ রুম থেকে অপসারন করতে সক্ষম।

সাধারণভাবে ধরে নেয়া হয়,

রুমের সাইজ

এসির ক্যাপারিটি দরকার

১৫০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত

১ টন বা ১২০০০ BTU

২৫০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত

১.৫ টন বা ১৮০০০ BTU

৪০০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত

২ টন বা ২৪০০০ BTU

এছাড়া আরও কিছু ফ্যাক্টরের উপর এসির ক্যাপাসিটি নির্ভর করে। যেমনঃ রুমে কতজন মানুষ থাকে, রুম কিচেনের আসেপাশে কিনা, আপনার রুম টপ ফ্লোরে কিনা, সূর্যের আলো সরাসরি আপনার রুমে আসে কিনা, রুমে জানালা কয়টা ইত্যাদি। একারনে সেফটির জন্য এই চার্ট ফলো করতে পারেনঃ

রুমের সাইজ

এসির ক্যাপারিটি দরকার

১২০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত

১ টন বা ১২,০০০ BTU
২০০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত

১.৫ টন বা ১৮,০০০ BTU

৩৫০ স্কয়ার ফিট পর্যন্ত

২ টন বা ২৪,০০০ BTU

জানালা বেশি হলে এবং সূর্যের আলো সরাসরি আপনার রুমে আসার সুযোগ থাকলে জানালায় ভারি পর্দা ব্যবহার করতে পারেন।

আপনার রুমের সাইজ যাই হোক না কেন, আমি সাজেস্ট করব আপনি দের টনের এসি কিনবেন। কারণ আজ হয়ত আপনি ছোট রুমে আছেন দুই চার বছর পরও আপনি ছোট রুমে থাকবেন তার কোন নিশ্চয়তা নেই তাই ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে আপনার উচিত দেড় টনের এসি কেনা।

এসির দাম কত

সাধারণত এসি চার রকমের হয়ে থাকে। স্প্লিট এসি, উইন্ডো টাইপ এসি, ক্যাসেট টাইপ এসি, ফ্লোর স্ট্যান্ড টাইপ এসি।

বাসা বাড়িতে সাধারণত স্প্লিট এবং উইন্ডো টাইপ এসি ব্যবহার করা হয়। তবে, উইন্ডো টাইপ এসি সেট করার জন্য রুমের দেয়াল কাটতে হয় বলে এর প্রচলন কম যদিও উইন্ডো টাইপ এসি বেশি টেকসই হয়।

ক্যাসেট টাইপ এসি অফিস আদালতে এবং ফ্লোর স্ট্যান্ড টাইপ এসি কল কারখানা বা ইকুইপমেন্ট যেসব রুমে থাকে সেখানে ব্যবহার করা হয়।

আমি এখানে শুধু বাসাবাড়িতে ব্যবহৃত হয় যেসব স্প্লিট এসি তাই নিয়ে কথা বলব।

ব্র্যান্ড অনুযায়ি এসির দাম কম বেশি হতে পারে। বর্তমান বাজার অনুযায়ি কয়েকটি ব্র্যান্ডের দামের তুলনামূলক চিত্র আপনাদের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করছি।

সিরিয়াল নং

ব্র্যান্ড ১ টন

(নূন্যতম দাম)

১.৫ টন

(নূন্যতম দাম)

২ টন

(নূন্যতম দাম)

জেনারেল (General) ৭৪,০০০.০০ টাকা ৮৫,০০০.০০ টাকা ১,১৮,০০০.০০ টাকা

এলজি (LG) ৭৪,৫০০.০০ টাকা ১,০৫,০০০.০০ টাকা ১,১৫,০০০.০০ টাকা

গ্রি (Gree) ৪৬,০০০.০০ টাকা ৫৪,০০০.০০ টাকা ৭৪,০০০.০০ টাকা

স্যামসাং (Samsung) ৬৭,০০০.০০ টাকা ৮৪,০০০.০০ টাকা ৯৪,৫০০.০০ টাকা

সিংগার (Singer) ৫২,০০০.০০ টাকা ৭৬,০০০.০০ টাকা ৮৪,০০০.০০ টাকা

এছাড়াও মার্কেটে বিভিন্ন চাইনিজ ব্র্যান্ডের এসি রয়েছে যা আরও কম দামে কিনতে পারবেন। তবে, ভাল সার্ভিস পাবার জন্য আমি সাজেস্ট করব নামি দামি ব্র্যান্ডের এসি কিনুন। কম দামি এসির সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এর বিদ্যুৎ বিল বেশি আসবে।

এসির বিদ্যুৎ বিল কেমন আসে

আসুন একটি ১.৫ টনের বিদ্যুৎ বিল কত আসে হিসাব করে দেখি। ধরে নিচ্ছি আপনি এসিটি দিনে ৬ ঘন্টা চালাবেন। মাসে চালাবেন ৬X৩০ = ১৮০ ঘন্টা। ১.৫ টনের এসির বিদ্যুৎ লোড নেয় ১৮০০ ওয়াট।

তাহলে মাসে আপনার বিদ্যুৎ খরচ হবে  = ১৮০X১৮০০=৩২৪,০০০ ওয়াট-ঘণ্টা।

মনে রাখবেন,

১ কিলোওয়াট = ১০০০ ওয়াট এবং বিদ্যুতের ১ ইউনিট= ১ কিলোওয়াট-ঘণ্টা

সুতরাং, আপনার বিদ্যুৎ খরচ = ৩২৪,০০০/১০০০ = ৩২৪ ইউনিট

প্রতি ইউনিট গড়ে ৬ টাকা হলে মাসিক বিল= ৬X৩২৪= ১,৯৪৪.০০ টাকা।

প্রতি ঘন্টায় বিদ্যুৎ খরচ= ১৯৪৪/১৮০= প্রায় ১১ টাকা।

এসির বিদ্যুৎ খরচ কমানোর উপায়

এসির ব্যবহার অপ্টিমাইজ করে আপনি আপনার এসির বিদ্যুৎ বিল কমিয়ে আনতে পারেন। কিভাবে অপ্টিমাইজ করবেন? আসুন জেনে নেই।

১। এসির টেম্পারেচার সবসময় ২৫ ডিগ্রী রাখুন। এতে রুমের তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রী হয়ে গেলে এসির কম্প্রেসর বন্ধ হয়ে যাবে এবং আপনার বিদ্যুৎ বিল কমে আসবে। রুমের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে এসির কম্প্রেসর অটোমেটিক চালু হবে।

২। ঘুমানোর সময় টাইমার ব্যবহার করুন। ৪ ঘন্টার টাইমার দিয়ে ঘুমান। রাতে তাপমাত্রা এমনিতেই কমে যায়। এসির দরকার হয় না।

৩। সময় মত এসির ফিল্টার পরিস্কার করুন, এসির বিদ্যুৎ খরচ কম হবে।

৪। গরম সহ্যের মধ্যে থাকলে এসি বন্ধ রাখুন।

৫। রুম এয়ারটাইট রাখুন এতে খুব সহজে রুম ঠান্ডা হবে, বিল কম আসবে।

আশা করি আমাদের আজকের ব্লগটি আপনাদের ভাল লেগেছে। ব্লগটি ভাল লেগে থাকলে য়ামাদের পেইজে লাইক দিন এবং রেডিটুরিডিং ব্লগের সাথেই থাকুন।

সবাইকে ধন্যবাদ।

Previous articleসূর্যগ্রহণ কেন হয় এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি?
Next articleএন্ড্রয়েড মোবাইল নিয়ে ২৫টি মজার তথ্য
যে ব্যর্থ সে অজুহাত দেখায়, যে সফল সে গল্প শোনায়। আমি অজুহাত নয় গল্প শোনাতে ভালবাসি। আসুন কিছু গল্প শুনি, নিজের গল্প অন্যকে শুনাই।