আপনি কি আপনার ব্লগের জন্য সঠিক নিয়মে আর্টিকেল লিখতে চান? আপনি কি চান, আপনার লিখাটি গুগলে র্যাংক করুক? একজন কনটেন্ট রাইটার হিসেবে বিভিন্ন ব্লগের এ্যাডমিনদের মন জয় করে মোটা অংকের সম্মানী কিংবা নিজের ব্লগে ভালো পরিমাণ ভিজিটর অর্জন কি আপনার প্যাশন? উত্তর যদি ‘হ্যাঁ’ হয়, তবে নড়েচড়ে বসুন! আমি দুই পর্বে ব্লগের জন্য আর্টিকেল লেখার নিয়ম এবং সঠিক নিয়মে ব্লগ লেখার কলাকৌশল নিয়ে আলোচনা করব, সাথে থাকবে দুর্দান্ত সব এসইও ট্রিক্স, যেগুলো হয়তো আপনি এখনো জানেন না। তো শুরু করা যাক পর্ব-০১।
ব্লগের জন্য সঠিক নিয়মে আর্টিকেল লিখা কেন এতো জরুরী
অনলাইনভিত্তিক ওয়েবসাইট কিংবা ব্লগে আর্টিকেল লিখা আর সাধারণ সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিনে আর্টিকেল লিখা কিন্তু মোটেই এক জিনিস নয়। এদের মাঝে রয়েছে বিস্তর তফাৎ। সাধারণ সব সংবাদপত্র বা ম্যাগাজিনে আর্টিকেল লিখার সময় কখনোই সার্চ ইঞ্জিনের কথা মাথায় আনতে হয়না। লেখকের একমাত্র চিন্তা থাকে পাঠক। পাঠকের মন জোগাতে পারলেই তার আর্টিকেলটি হয় স্বার্থক।
অন্যদিকে অনলাইনভিত্তিক ওয়েবসাইটগুলোর বেলায় বিষয়টা একটু ভিন্ন। ব্লগের একজন লেখক বা ব্লগারকে শুধু পাঠক নয়, খেয়াল রাখতে হয় সার্চ ইঞ্জিনগুলোর কথাও। তার মাথায় রাখতে হয় গুগল, ইয়াহু কিংবা বিং এর দিকনির্দেশনা। কারণ এ সব সার্চ ইঞ্জিনগুলোই পাঠক এবং একটি ওয়েবসাইটের মাঝে যোগসূত্র তৈরী করে।
কিভাবে যোগসূত্র তৈরী করে?
মনে করুন, আপনার ব্লগে আপনি খুব গুছিয়ে সাজিয়ে তথ্যবহুল একটি আর্টিকেল লিখলেন। আপনি আশা করছেন, এই লিখাটি পরবর্তী এক বছরে দশ হাজার মানুষ পড়বে।
শুধু আশা করলেই তো হবে না, আশা বাস্তবায়নে কাজ করতে হবে। এজন্য ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপনার আর্টিকেলের লিংক শেয়ার করে দিলেন। ব্যস, কাজ শেষ, তাই না?
আপনি যদি শতকরা ৯৯ জন ব্লগারের মতো সাধারণ মানুষ হয়ে থাকেন, তাহলে কখনোই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে লিংক শেয়ার করে দশ হাজার ভিজিটর পাবেন না। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে থাকা বহু মানুষের কাছে লিংক পৌছালেও সবাই লিংকে ক্লিক করে আপনার আর্টিকেলটি পড়বে না। কারণ আপনার লিখার বিষয়বস্তু সবার মনে আগ্রহ জন্ম দেবে না। আর সবচেয়ে দুঃখের কথা হলো, সারা বিশ্বের মানুষের কাছে এই লিংকটি পৌছাবেই না। লিংক শেয়ার করার পর পর বেশ কিছু মানুষ লিংকটি টাইমলাইনে পেলেও কিছুদিন পর তার অস্তিত্ব বিলীন হয়ে যাবে।
তাহলে উপায়? উপায় একটাই, একটা দীর্ঘস্থায়ী মাধ্যম, যেটা আপনার লিখার বিষয়বস্তু বুঝতে পারবে এবং সঠিক পাঠকের কাছে লিখাটি পৌছে দেবে।
এমন মাধ্যমই হলো বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিন। সার্চ ইঞ্জিনগুলো সবসময়ই ওয়েবসাইট বা ব্লগে পাবলিশ করা বিভিন্ন আর্টিকেলের বিষয়বস্তু বোঝার চেষ্টা করে। পরবর্তীতে সার্চ ইঞ্জিনে কেউ কখনো ওই বিষয়বস্তু সম্পর্কে সার্চ দিলে সার্চ ইঞ্জিন ওই ব্লগ বা ওয়েবসাইটগুলোর আর্টিকেল মানুষের সামনে তুলে ধরে।
তাহলে নিশ্চয়ই বুঝতে পারছেন, সার্চ ইঞ্জিনের প্রয়োজন কতটুকু!
এতটুকু পড়ে ফেলে হয়তো আপনি ভাবছেন, আচ্ছা ঠিক আছে, সার্চ ইঞ্জিনের সাথে একটা সম্পর্ক করা উচিৎ। কিন্তু কিভাবে তৈরি করবেন এই সম্পর্ক? হ্যা, ঠিক ধরেছেন সাইটম্যাপের মাধ্যমে এটা করা হয়ে থাকে। সাইটম্যাপ নিয়ে বিস্তারিত পাবেন এখানে।
গুগলসহ বিভিন্ন সার্চ ইঞ্জিনে ওয়েবসাইট যুক্ত করে। তাই তো? হ্যাঁ। কিন্তু এতটুকু করলেই কি কাজ শেষ? আর্টিকেল লেখার নিয়ম এখানেই শেষ নয় বরং শুরু বলতে পারেন।
এখানে উল্লেখ্য, সবচেয়ে জনপ্রিয় সার্চ ইঞ্জিন গুগলে হাজার হাজার বাংলা ওয়েবসাইট যুক্ত আছে। সেগুলোতে আছে নানা রকম কনটেন্ট। এত সব কনটেন্টের ভীড়ে আপনার ওয়েবসাইটের কনটেন্ট কি আদৌ ভালো পজিশন করতে পারবে? পারলেও সেটা কিভাবে? কিভাবে গুগল বুঝবে, আপনার কনটেন্টই সেরা?
এখানে বলে রাখা ভালো, কনটেন্টের ভালোমন্দ বিচার করে র্যাংকিং কিন্তু কোনো মানুষ করে না। করে একটা রোবট। সেই রোবট আপনার লেখা আর্টিকেল পড়ে ভাবগত কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারে না। অর্থাৎ আপনি কি লিখেছেন, কতটা মাধুর্য মিশিয়ে শব্দ প্রয়োগ করেছেন, এগুলোর কিছুই গুগলের রোবোট বুঝবে না। গুগলের রোবোট শুধু দেখবে আপনার আর্টিকেলের গঠন বা স্ট্রাকচার। এখানে আর্টিকেল লিখার সঠিক নিয়ম বলতে সঠিক স্ট্রাকচার দান করাই বোঝানো হচ্ছে।
একটি আর্টিকেলকে কিভাবে ভালো গঠন দেয়া যায়, কিভাবে সঠিক নিয়মে সাজানো যায়, সেটিই বিস্তারিত আলোচনা হবে পরের পর্বে। সে পর্যন্ত ভাল থাকুন সবাই।