এপিলেপসি পারকিনসন এই দুইটি আমাদের কাছে অপরিচিত নাম। তবে রোগ দুটি আমাদের কাছে বেশ পরিচিত। এপিলেপসিকে আমরা সাধারণত মৃগীরোগ নামে চিনে থাকি৷ মস্তিষ্কের এই রোগটি দ্বারা কেউ যদি আক্রান্ত হয় তাহলে শরীরে খিঁচুনি এবং কাঁপুনি শুরু হয়। আবার পারকিনসন এমন এক ধরনের রোগ রোগে আক্রান্ত হলে হাতে এবং পায়ে কাঁপুনি হয় এবং হাঁটাচলা নড়াচড়া করতে অসুবিধা হয়।

দুটি রোগের এর মধ্যে সাদৃশ্য হলো এই দুইটি রোগী স্নায়ুবিক বৈকল্য জনিত শারীরিক সমস্যা। এছাড়াও রোগের লক্ষণ এর দিক দিয়েও এই দুই রোগের যথেষ্ট সাদৃশ্য রয়েছে। আজকের ব্লগে এপিলেপসি ও পারকিনসন রোগ সম্পর্কে আজকে আমি আপনাদেরকে জানাব।

এপিলেপসি (Epilepsy) কি

শুরুতেই বলা হয়েছে এপিলেপসি রোগে যদি কেউ আক্রান্ত হয় তাহলে সেই ব্যক্তির গায়ে খিঁচুনি অথবা কাপুনি দিতে থাকে এবং অনেক সময় রোগী অজ্ঞান হয়ে যায়। এই রোগকে আমরা মৃগীরোগ হিসেবে চিনে থাকি। সব সময় এই রোগের লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় না। কিন্তু এই রোগের কারণে আক্রান্ত ব্যক্তি সাময়িকভাবে কার্যক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। শরীরে কাপুনি এবং খিচুনি দিতে থাকে। এক পর্যায়ে রোগী মাটিতে লুটিয়ে পড়ে এবং উঠে দাঁড়াবার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে। একটি কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে। আগুন অথবা পানির সংস্পর্শে আসলে মৃগী রোগের লক্ষণ প্রকাশ পায়!

তবে ধরনের ধারনাটি সম্পূর্ণ ভুল। আগুন অথবা পানির কাছে গেলেই নয় যেকোনো বিপদজনক স্থানের কাছে গেলে মৃগী রোগীরা যদি মাটিতে লুটিয়ে পড়ে, তাহলে সেখান থেকে উঠে দাঁড়াবার সামর্থ্য হারিয়ে ফেলে। আর সে কারণে কোন বিপজ্জনক বস্তু অথবা স্থান থেকে মৃগী রোগে আক্রান্ত রোগীদের দূরে রাখাই ভালো।

এপিলেপসি

এপিলেপসি (Epilepsy) কেন হয়

মৃগী রোগের সঠিক কোনো কারণ সম্পর্কে জানা যায়নি। স্ট্রোকে আক্রান্ত রোগীরা মৃগী রোগে আক্রান্ত হতে পারে। এছাড়াও মস্তিষ্কে আঘাতের কারণে এনসেফালাইটিস, ম্যানেনজাইটিস, মস্তিষ্কে টিউমার ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে মৃগী রোগে আক্রান্ত হওয়ার পূর্ব ইতিহাস থাকে।

যেকোনো বয়সে এপিলেপসিরোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এটি দীর্ঘমেয়াদি কোনো ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে না। তবে ক্ষেত্র বিশেষে মস্তিষ্কে স্থায়ী কোন ক্ষতির কারণ হতে পারে।

মৃগী বা এপিলেপ্সি রোগ কোন অভিশাপ নয়। বরং স্নায়ুবিক বৈকল্য জনিত একটি রোগ। এবং বর্তমানে এই রোগের আধুনিক চিকিৎসা বাংলাদেশে রয়েছে।

পারকিনসন (Parkinson) কি

এপিলেপসি মত আরেকটি স্নায়বিক বৈকল্য বৈকল্য জনিত রোগ পারকিনসন । এটি পারকিন্সস ডিজিজ নামে পরিচিত। পারকিনসন স্নায়ুবৈকল্য জনিত এক ধরনের রোগ যার ফলে দেহের স্বাভাবিক নড়াচড়া এবং হাঁটাচলা ব্যাঘাত ঘটে থাকে ।একটা সময় ধারণা করা হতো কেবলমাত্র পঞ্চাশোর্ধ মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে তবে শুধু পঞ্চাশোর্ধ্ব মানুষই নয় বরং যুবকযুবতীরাও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

পারকিনসন

পারকিনসন (Parkinson) কেন হয়

স্নায়ু কোষ থেকে এক ধরনের রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয়। সেটির নাম ডোপামিন যা আমাদের পেশী পরিচালনায় সহায়তা করে যত বয়স্ বাড়তে থাকে ডোপামিন নিঃসরণের পরিমাণ দিন দিন কত কমতে থাকে। ফলে একপর্যায়ে মাংসপেশি তার কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে। বয়স বাড়ার সাথে সাথে মাংসপেশী অকার্যকর হয়ে পড়ে ।ফলে চলাফেরা, লেখালেখি এই সকল কাজগুলো কষ্টকর হয়।

পারকিনসন রোগ ধীরে ধীরে ভয়াবহ আকার ধারণ করে। প্রাথমিক অবস্থায় হালকা হাতপা কাঁপে ।ফলে চলাফেরা বিঘ্নিত হয়।

এছাড়াও পারকিনসন রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের নিম্নলিখিত লক্ষণগুলো প্রকাশ পায়

  • চোখের পাতার কাঁপুনি
  • কোষ্ঠকাঠিন্য
  • খাবার গিলতে কষ্ট হওয়া
  • সোজাসুজি হাঁটতে না পারা
  • কথা বলার সময় বচনভঙ্গি না আসা ইত্যাদি।

সম্প্রতি পারকিনসন্স রোগের একটি ওষুধ বের হয়েছে, যার মাধ্যমে শরীরে প্রয়োজনীয় ডোপামিন উৎপন্ন করা যায় ।তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে এটি কতটুকু কার্যকর হবে সেই বিষয়ে চিকিৎসকদের মতভেদ রয়েছে ।তবে তরুণতরুণীদের ক্ষেত্রে এটি প্রয়োগ করে সফলতা এসেছে। নিয়ম মেনে ঔষধ সেবন করা জরুরী।

পারকিনসন রোগে আক্রান্ত হলে নিয়মিত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে। ফিজিওথেরাপি গ্রহণ করতে হবে ।পরিমিত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবং সুশৃংখল জীবনযাপন করতে হবে।

Previous articleরক ব্যান্ড কুইন-পঞ্চাশ বছরের রক সেনসেশন
Next articleআমি কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্স থেকে টাকা আয় করছি
Istiak Ahmed Ullas
টুকিটাকি লেখালখি করি!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here