আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন কিছুদিন ধরে আমাদের ব্লগের বিভিন্ন জায়গায় বেশ কিছু বিজ্ঞাপন দেখা যাচ্ছে। এ বিজ্ঞাপনগুলো কিভাবে এল, কেন এই বিজ্ঞাপন এবং এতে কার লাভ- এ প্রশ্নগুলো নিশ্চিতভাবেই আপনার মাথায় এসেছে। আজকের ব্লগে আমি আপনাদের এসকল প্রশ্নের উত্তর দিব। আর আপনিও যদি আপনার ব্লগে এমন বিজ্ঞাপন দিতে চান তাহলে আর দেরি না করে এই ব্লগটি পড়তে থাকুন, গুগল এ্যাডসেন্স নিয়ে জানুন। কারণ এই ব্লগটি আপনার জন্যই লেখা।
গুগল এ্যাডসেন্স কি
গুগল এ্যাডসেন্স হল গুগলের এমন একটি সার্ভিস যার মাধ্যমে আপনি আপনার সাইটকে গুগলের এ্যাড প্রদর্শনের জন্য উম্মুক্ত করে দিচ্ছেন। আপনার সাইটের কিছু নির্ধারিত জায়গা আপনি গুগলকে দিবেন আর গুগল সেখানে তার বিজ্ঞাপন প্রচার করবে। বিনিময়ে গুগল তার এ্যাড থেকে প্রাপ্ত রেভিনিউ আপনার সাথে শেয়ার করবে।
শুধু কি বিজ্ঞাপন দেখালেই টাকা আয় করা সম্ভব? ব্যাপারটি একদমই তা নয়। শুধু ইম্প্রেশনে আপনি টাকা পাবেন না। কোন ভিজিটর আপনার সাইটে আসলে গুগলের দেখানো ঐ বিজ্ঞাপনে যদি ক্লিক করে তাহলেই আপনি রেভিনিউ এর অংশ পাবেন। এই প্রক্রিয়াটি বা এই সার্ভিসটির নামই হল গুগল এ্যাডসেন্স।
গুগল এ্যাডসেন্স হল অনলাইনে আয় করার একটি জনপ্রিয় মাধ্যম। আপনার যদি একটি ব্লগ বা ওয়েবসাইট থাকে তাহলে খুব সহজেই আপনি গুগল এ্যাডসেন্স থেকে আপনি টাকা আয় করতে পারবেন।
কত টাকা আয় করা সম্ভব
এটা আসলে সঠিক ভাবে বলা যাচ্ছে না। কিন্তু নতুনেরা এই প্রশ্নটিই করে থাকে। আসলে এটা নির্ভর করে আপনার সাইটের ভিজিটর সংখ্যা এবং কি ধরনের বিজ্ঞাপন দেখানো হচ্ছে তার উপর। তবে এটুকু বলা যায়, গুগল তার রেভিনিউ এর শতকরা ৬৮ ভাগ আপনার সাথে শেয়ার করে। অর্থাৎ কোন বিজ্ঞাপন থেকে গুগল যদি ১০০ টাকা আয় করে তাহলে আপনাকে সে ৬৮ টাকা দিবে এবং বাকি ৩২ টাকা সে নিবে।
গুগল এ্যাডসেন্স নিয়ে আরেকটু পরিস্কার ধারনা
আপনি হয়ত গুগল এ্যাড ওয়ার্ডের নাম শুনে থাকবেন। না শুনে থাকলে কিছুটা ধারনা দেই- গুগল এ্যাড ওয়ার্ড হল গুগলের এমন একটি সার্ভিস যার মাধ্যমে কোন ব্যবহারকারি বিভিন্ন সাইটে বিজ্ঞাপন প্রদর্শনের জন্য চুক্তিবদ্ধ হয়।
ধরুন, আপনি গুগল সার্চ ইঞ্জিনে গিয়ে কোন কিওয়ার্ড দিয়ে সার্চ করেছেন, তাহলে গুগল আপনাকে কিছু ওয়েবসাইট রেফার করবে। যা নিচের ছবির মত হতে পারে। ছবিতে লক্ষ্য করুন কিছু সার্চ রেজাল্টের আগে লেখা আছে Ad মানে এ্যাড।
গুগল এ্যাড ওয়ার্ডের কোন এক ব্যবহারকারি হয়ত আপনার ব্যবহৃত কি ওয়ার্ডের বিপরীতে এই এ্যাড দিতে চেয়েছে, তাই আপনাকে এই এ্যাড দেখান হয়েছে। আপনি যদি ঐ এ্যাডে ক্লিক করেন তাহলে প্রতি ক্লিকের জন্য ঐ বিজ্ঞাপনদাতার নির্দিষ্ট অংকের টাকা পরিশোধ করতে হবে গুগলকে। পুরো টাকাটাই গুগল পাবে।
আর যদি আপনি ঐ এ্যাডগুলোতে ক্লিক না করে সরাসরি রেফার করা কোন ওয়েবসাইটে চলে যান তাহলে গুগল আপনার কি ওয়ার্ড বিবেচনা করে কিংবা সাইটের কন্টেন্টের উপর ভিত্তি করে ঐ সাইটে আপনাকে কিছু বিজ্ঞাপন দেখাবে, যেটা এই সাইটে করা হয়েছে।
আপনি যদি উৎসাহিত হয়ে কিংবা প্রয়োজনীয় মনে করে ঐ ওয়েব সাইটে দেখান কোন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করেন, তবে ঐ ওয়েবসাইটের মালিক এ্যাডের রেভিনিউ শেয়ার পাবে। আশা করি ব্যাপারটি বুঝতে পেরেছেন।
বিশেষ সতর্কতা – অযথা কিংবা প্রয়োজন নেই অথবা অতি উৎসাহিত হয়ে কোন বিজ্ঞাপনে ক্লিক করবেন না।
কিভাবে গুগল এ্যাডসেন্সের জন্য আবেদন করবেন
গুগল এ্যাডসেন্স এ আবেদন করা একটি সহজ প্রক্রিয়া কিন্তু বিশেষ সতর্কতার সাথে এটা করতে হয়। সম্পূর্ণ প্রস্তুত না হয়ে আবেদন না করাই শ্রেয়। আপনার ইমেইল এড্রেস ব্যবহার করে গুগল এ্যাডসেন্স ব্যবহার করে আপনি নিজেই আবেদন করতে পারেন।
আসুন জেনে নেই আবেদন করার পূর্বশর্তগুলো কি কি
- আপনার ওয়েবসাইটে নূন্যতম ৩০ টি ব্লগ থাকতে হবে। অনেকে এর কমেও এপ্রোভাল পেয়েছেন। এরকম কোন বিশেষ নিয়ম নেই, তবে ধরে নেওয়া হয় ৩০টি কিংবা তারচেয়ে বেশি ব্লগ থাকলে গুগল সহজেই এপ্রোভ করবে।
- আপনার কন্টেন্টগুলো যেন নূন্যতম ৫০০+ ওয়ার্ডের হয়।
- আপনার সাইটটির ডোমেইন এজ/বয়স যেন ৩ মাস বা তার চেয়ে বেশি হয়। কম হলেও আপনি এপ্রোভাল পেতে পারেন।
- আপনার ওয়েব সাইটে About us, Contact us, Privacy Policy ইত্যাদি থাকতে হবে।
- আপনার কন্টেন্ট এবং ব্যবহার করা ফটো ইউনিক হতে হবে। অন্য কোন সাইট থেকে কপি করা লেখা বা ছবি থাকা যাবে না।
- আপনার সাইটটি চালু থাকতে হবে, মানে নিয়মিত আপডেট হয় এমন হতে হবে। আন্ডার কন্সট্রাশন কিংবা সাইট এর কোন এক্টিভিটিস নেই এমন হওয়া যাবে না।
- ওয়েবমাস্টার টুলে আপনার সাইট ঠিকমত সিংক করা আছে কিনা দেখে নিন। সার্চ কনসোলে আপনার কনটেন্টগুলো ইন্ডেক্স করা আছে কিনা দেখে নিন।
- আপনার সাইটটি এসইও ফেন্ডলি কিনা দেখে নিন আর আপনার সাইটটি অবশ্যই মোবাইল ফ্রেন্ডলি হতে হবে।
উপরের শর্তগুলো মেনে যেকেও তার ওয়েব সাইটে এ্যাডসেন্সে আবেদন করতে পারেন। আর এপ্রোভালের পর টাকা আয় করুন সহজেই।
এই লেখাটি পড়ে উপকৃত হয়ে আপনি যদি রেডিটুরিডিং ব্লগকে ডোনেট করতে চান তাহলে বিকাশ-০১৬১৪১৭১৭৬৫ অথবা নগদ-০১৭১৪১৭১৭৬৫ অথবা ইউক্যাশ-০১৭১৪১৭১৭৬৫ এ আপনার ডোনেশন পাঠাতে পারেন।
অথবা,
আমাদের ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করেও আমাদের উৎসাহিত করতে পারেন। ইউটিউব চ্যানেল লিংক এখানে। আশা করি অবশ্যই ইউটিউব চ্যানেল সাবস্ক্রাইব করে আমাদের সহযোগীতা করবেন। তাহলে আমরা উৎসাহিত হয়ে আরও লেখা পাবলিশ করব।
তথ্যপূর্ণ পোস্ট। ভালো ছিলো
ধন্যবাদ আপনাকে।