ভাল থাকা আসলে কি? আসুন একটু ভেবে দেখি। আপনার ভাবনার সুবিধার্থে একটা ছোট ঘটনা শেয়ার করি।
একদিন রাস্তায় এক টং দোকানে চা খাচ্ছি, লুংগি পড়া এক লোক আরেক লোককে বেশ উৎসাহ নিয়ে বলছে, “কাইল এক বাসা দেইখা আইলাম, ২০০০ টাকা ভাড়া। এতো সুন্দর- লগে লগে এডভান্স কইরা দিছি। পরে আমার বউ নিয়া যায়া দেইখা আইলাম। হেয়ও খুব পছন্দ করছে।”
সফলতা নিয়ে আমার এই ব্লগ টি পড়ে দেখবেন আশা করি। সফল যারা কেমন তারা।
দুই হাজার টাকার বাসা তার এত পছন্দ হয়েছে জামাই-বউ মিলে খুব খুশি। হয়ত রাতে ঘুমানোর সময়ও এই নিয়ে দশ মিনিট বেশি গল্প করেছে। প্রিয়তমা স্ত্রীও হয়ত মুগ্ধ নয়নে তার দিকে কিছুক্ষন তাকিয়ে ছিল। এটাই তাদের ভাল থাকা।
আবার অনেকের ভাল থাকা মানে ঢাকা শহরের ভাল জায়গায় ৩ বেড, ৩ বারান্দা নিয়ে ৩০ হাজার টাকার বাসায় থাকা। কেওবা এতেও খুশি নয়। আবার অভিজাত এলাকায় নিজস্ব ফ্লাটও কাওকে ভাল রাখতে পারেনা। কি অদ্ভুত!! একবার ভেবে দেখেছেন?
তারমানে আপনার টাকা-পয়সা, ধন-দৌলত কিংবা সম্পদ আপনাকে ভাল রাখতে পারেনা। আপনাকে ভাল রাখে আপনার সন্তুষ্টি আর আপনার আশেপাশের বিশেষ করে আপনার মানুষ।
আপনার জন্মের উপর আপনার হাত নেই, আপনি হয়ত জন্মাতে পারেন কুঁড়ে ঘরে কিংবা অট্রালিকায়, ফকিরের ঘরে অথবা ধনীর দুলাল হয়ে। ওখান থেকেই শুরু। আপনার সন্তুষ্টির লেভেলটা তৈরি হয় ঐ পরিবেশ থেকে। বাবার কাছ থেকে বাইসাইকেল উপহার পেলে খুশি হবেন নাকি মটর সাইকেল, সন্তুষ্টির সেই বোধটা হয়ত ছোট থেকেই তৈরি হতে থাকে।
কেওবা অনেক সাহসি হয় জন্ম থেকেই, তার চারপাশের পরিবেশ তাকে সন্তুষ্ট করতে পারেনা। তারা ছোট থেকেই স্বপ্ন দেখে, এরা হয় স্বপ্নবাজ। এরা বাইসাইকেল কিংবা মটর সাইকেল যাই পাকনা কেন এরা আরও বড় কিছু চায়, আরও বড় হতে চায়। স্বপ্ন তাদের তাড়া করে বেড়ায়, চ্যালেঞ্জ নিতে ভালবাসে। কোন ঘরে জন্মালো সেটা এদের জন্য কোন ব্যাপার নয়, এরা সামনে এগিয়ে যায়। কেও ভাল পথ বেছে নেয় আবার কেওবা খারাপ। ভাল, খারাপ যেই পথই এরা বেছে নেক না কেন এরা বড় হবেই।
আবার, হাস্পাতালের বেডে শুয়ে থাকা একজন অসুস্থ রুগী সুস্থ্য হয়ে বাড়ি ফিরলেই সে বলে ভাল আছি। হাসপাতালে শুয়ে থাকাকালে আজীবন আয় করা টাকা-পয়সা তার কাছে অর্থহীন মনে হয়েছে। সুস্থ্যতাই তার কাছে সবচেয়ে বড় ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায় তখন।
এই একটা জায়গায় দুনিয়ার সব মানুষের প্রাপ্তি সমান। আসলে এটাই সত্য। সুস্থ্যতাই ভাল থাকা। তাই আমরা যারা সুস্থ্য আছি, আমরাই ভাল আছি। দুনিয়ার বাকি সবগুলো বিষয়ই আপেক্ষিক।
যাই হোক, আমার লেখার আসল উদ্দেশ্য আমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে আমরা ভাল থাকি। সুপথে থাকি, সামনের দিকে এগিয়ে যাই। ভাল থাকবেন সবাই, সুস্থ্য থাকবেন এই কামনা করি।